ফের একটা ‘সাজানো ঘটনা’র তত্ত্ব দিয়ে নারদ কাণ্ডে অভিযুক্তদের পাশেই দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইন্ডোরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সমাবেশে তিনি সরাসরি বলেন, সারদা বা নারদ, কোনও কিছু থেকেই টাকা নেয়নি তাঁর দল। তিনি বলেন, “তুমি আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে, টেবিলে টাকা রেখে ছবি তুলে বলছ ঘুষ নিয়েছ, তা হলে কি দেখা করা যাবে না? এ ভাবে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা চলছে।” নারদ কাণ্ডে জড়িয়ে যে ভাবে দলকে কলুষিত করার চেষ্টা চালানো হয়েছে, তা মানুষে কোনও ভাবেই মেনে নেয়নি। জবাব দিয়েছে ভোটেই। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এ ধরনের কাজ করার চেষ্টা করছেন তাঁদের মুখোশ টেনে খুলে দিতে হবে।” বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদের স্টিং অপারেশনের ভিডিও নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল। বিরোধীরা নারদকে সামনে রেখেই নির্বাচনে প্রচার চালিয়েছিল। কিন্তু মা-মাটি-মানুষ তাদের যে ক্ষমা করেনি সেটা মঞ্চ থেকে এ দিন ফের বুঝিয়ে দিলেন মমতা। ববি হাকিম, শুভেন্দু অধিকারীদের পাশে বসিয়ে কার্যত তাঁদের ‘ক্লিনচিট’ দিলেন নেত্রী।
এক দিকে যেমন তিনি নারদ নিয়ে ববি, শুভেন্দুদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, অন্য দিকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন, যে ভাবে দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়েছে তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এই কারণেই যে দল রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় আসন হারিয়েছে সেই বার্তাও দিয়েছেন তিনি। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, যাঁরা নির্বাচনের সময় দলবিরোধী কাজ করেছেন তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে। দল ইতিমধ্যেই একটি অন্তর্ঘাত কমিটি তৈরি করে ফেলেছে। দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে বলে জানান মমতা। শ্রমিক সংগঠন নিয়ে বলতে গিয়ে ফের সেই অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ সামনে আসে। দলীয় কর্মীদের তিনি মনে করিয়ে দেন, একটাই শ্রমিক সংগঠন থাকবে। কেউ যদি মনে করেন, দু’তিনটি সংগঠন তৈরি করে পকেটে টাকা পুরবে, তা কোনও ভাবেই দল মেনে নেবে না। একই সঙ্গে দোলা সেনকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আপনাকে কঠোর যেমন হতে হবে, তেমনই নরমও হতে হবে। ‘অ্যাডজাস্ট’ করতে হবে, সম্মান করতেও জানতে হবে। মানুষের জন্যই আমরা এখানে আছি, কেউ যেন ভুলে না যান সে কথা।’’
আরও খবর...