Mamata Bannerjee

দেশ জুড়ে মমতার সুনাম রয়েছে, তাই কলকাঠি নাড়ছে বিজেপি: ব্রাত্য

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুনাম আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। সে কারণেই স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫তম বর্ষে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি মমতাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ২১:০২
Share:

ব্রাত্য বসু।

সারা ভারত জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুনাম রয়েছে। সেই সুনাম আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করতে পারে। সে কারণেই স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫তম বর্ষে সেখানে যেতে দেওয়া হয়নি মমতাকে। ফের এমন দাবিতে সরব হল তৃণমূল। এ সব ঘটনার পিছনে যে বিজেপি-র হাত ছিল সোমবার সেই ইঙ্গিতও দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

Advertisement

সোমবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্রাত্য। নাম না করে মোদী সরকারকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শিকাগোর ১২৫তম বক্তৃতা দিবসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁকে যেতে দেওয়া হল না। সম্প্রতি একই ভাবে অক্সফোর্ডের বক্তৃতাও শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়েছে।’’ ব্রাত্যর প্রশ্ন, ‘‘এগুলো কি স্বাভাবিক ঘটনা? কারা কলকাঠি নাড়ছে? তাঁদের কি মনে হল, সারা ভারতবর্ষ জুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সুনাম রয়েছে তা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করবে? তাঁকে প্রসারিত করবে? এটা কি কাউকে বিপন্ন করল? চিন্তিত করল?” একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা দামি স্যুট পরে করদাতাদের টাকায় মাসের পর মাস, বছরের পর বছর বিদেশে ঘুরে বেড়ান, একাধিক দেশে সফর করেন, তাঁদের জন্যই মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা করতে যেতে পারেননি।”

১৮৯৩-র ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার শিকাগোতে বিশ্ব ধর্মসভায় স্বামীজি বক্তৃতা করেছিলেন। সেই দিনটি বাঙালির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দাবি করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘১১ সেপ্টেম্বর শিকাগোয় স্বামীজি যে বক্তৃতা করেছিলেন, সেটাকে মমতাদি মনে রেখে আমাদের জাতির স্মৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করে দিয়েছেন। বলেছেন, এটা হচ্ছে সম্প্রীতির দিবস। ওই লুপ্তপ্রায় দিনটাকে এখনও আমাদের মনে রাখতে হবে। স্বামীজির জন্মদিন উপলক্ষে প্রত্যেক বছর আমাদের সরকার ১০-১২ জানুয়ারি সারা রাজ্যবাপী বিবেক চেতনা উৎসব পালন করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এটা আমাদের রাজ্যে অভিনব ঘটনা।’’

Advertisement

আরও পড়ুন : রাজ্যে টিকা চলে আসতে পারে কাল, মোদী-মমতাদের মধ্যে আলোচনা

মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৭তম জন্ম দিবস। আগামিকাল ‘বিবেক জয়ন্তী’ উপলক্ষে রাস্তায় নামছেন তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাঙালি তথা হিন্দু আবেগকে কাজে লাগাতে তৎপর হয়েছে বিজেপি। একের পর এক বাঙালি মনীষী স্মরণে ব্রতী হয়েছেন বিজেপি-র রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। হিন্দু ধর্মের প্রচারক হিসেবে স্বামীজিকে তাঁরা নিজেদের দিকে টানতে চাইছে বলে বার বার অভিযোগ করেছে তৃণমূল। এ প্রসঙ্গে ব্রাত্যর যুক্তি, ‘‘রামকৃষ্ণের মূল কথা ছিল ‘যত মত, তত পথ’। তাঁর এই কথার মাধ্যমে প্রার্থনাসমাজ, আর্যসমাজ ও ব্রাহ্মসমাজের ধারণার সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে হিন্দু ধর্মের পুনরুজ্জীবন ঘটেছিল। আর তাঁর শিষ্য বিবেকানন্দ বলেছিলেন, জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। তাঁরা সকল ধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছিলেন। আর এখন সেই রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দকে বিজেপি ব্যবহার করতে চায়, এর থেকে হাস্যকর কিছু হয় না।’’

রাজনীতিতে বিবেকানন্দকে টেনে নামাতে চাইছে গেরুয়া শিবির, সোমবার এমনটাই দাবি করেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘‘বিবেকানন্দ দৈনন্দিন রাজনীতি পরিহার করে চলার পক্ষে ছিলেন। রামকৃষ্ণ মিশন তিনি যখন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তখন তিনি তাঁর সদস্যদের বলেছিলেন সেবা করো, কিন্তু দৈনন্দিন রাজনীতি থেকে দূরে থাকো। সেই দৈনন্দিন রাজনীতিতেও বিজেপি বিবেকানন্দকে টেনে নামাতে চাইছে।’’

আরও পড়ুন : গেরুয়া মিছিল থেকে তৃণমূলকে আক্রমণ শোভনের, বৈশাখীর মুখে ‘পদ্ম’ স্লোগান

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement