মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
হাথরস-কাণ্ড নিয়ে সুর আরও চড়ানোর পথে তৃণমূল। যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ পুলিশ শুক্রবার আটকে দিয়েছে তৃণমূল সাংসদদের। পুলিশের ধাক্কায় ধরাশায়ী হয়েছেন রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। কিন্তু তৃণমূল তাতে দমে যাচ্ছে না। উল্টে শনিবার বিকেলে কলকাতার রাজপথে নামছেন স্বয়ং দলেন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যোগীর রাজ্যে দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুন এবং তার পর সেখানকার পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা আগেই নিন্দায় সরব হয়েছিলেন। শনিবার সেই ইস্যুতেই মিছিল করতে চলেছেন তিনি। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন জেলার নেতাদের নিয়ে। সবক’টি জেলার চেয়ারম্যান, সভাপতি ও কো-অর্ডিনেটরকে ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। ডাকা হয়েছিল শাখা সংগঠনগুলির নেতাদেরও। নানা কর্মসূচি এবং সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্যই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই হাথরসে তৃণমূল সাংসদদের আটকে দেওয়ার খবর চলে আসে। পুলিশের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যান ডেরেক। তাই তৃণমূল নেতৃত্ব বৈঠকে জেলা নেতাদের নির্দেশ দেন, এই ‘হেনস্থা’র প্রতিবাদে গোটা রাজ্যে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে হবে। শনিবার মমতা নিজেই যে পথে নেমে সেই বিক্ষোভের সূচনা করে দিচ্ছেন, তা-ও বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
শনিবার বিকেল ৪টেয় শুরু হবে মমতার মিছিল। বিড়লা তারামণ্ডলের সামনে থেকে মেয়ো রোডের গাঁধীমূর্তি পর্যন্ত হাঁটবেন মমতা। তার পর থেকে পুজোর আগে পর্যন্ত রাজ্যের সব ব্লকে প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করবে তৃণমূল। নতুন কৃষি আইন এবং হাথরসে তৃণমূল সাংসদদের বাধা— এই দুয়েরই প্রতিবাদ জানানো হবে ব্লকে ব্লকে আয়োজিত ওই কর্মসূচিগুলিতে। জেলা নেতাদের সামনে আগামী ১০ দিনের জন্য কর্মসূচিও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন অভিষেক, সুব্রত এবং পার্থ। ৩ থেকে ১২ অক্টোবরের মধ্যে প্রত্যেক বিধানসভা এলাকায় কর্মী সম্মেলন করতে হবে, নির্দেশ অভিষেকের। প্রত্যেক জেলা সভাপতিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শনিবার জেলার মুখপাত্রদের সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করতে।
আরও পড়ুন: রেলের কমিটির নামে প্রতারণা, চার্জশিটে নেই মুকুলের নাম
বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকে গোটা দলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে চলতে হবে, এ কথা শুক্রবারের বৈঠকে ফের মনে করিয়েছেন অভিষেক। জেলা কমিটিগুলির সভাপতি, চেয়ারম্যান ও কো-অর্ডিনেটরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দলের সব অংশকে সঙ্গে নিয়ে চলতে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা উপদলীয় কার্যকলাপ কিছুতেই বরদাস্ত করা হবে না বলেই বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। খবর, যে তিনি বলেছেন, ‘‘হাত জোড় করে অনুরোধ করছি, এ বারের নির্বাচনে কেউ কাউকে বাদ দিয়ে কাজ করতে যাবেন না। সকলকে নিয়ে কাজ করতে হবে । কারও ব্যক্তিগত লাভের জন্য দলের ক্ষতি বরদাস্ত করব না।’’
আরও পড়ুন: সিনেমা হল খোলা নিয়ে মমতাকে তোপ বাবুলের, মামলার পরামর্শও