মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনখড়। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে এ বার সরাসরি হুঁশিয়ারির আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যপাল বিজেপির থেকেও ভয়ঙ্কর কথা বলছেন। ওই দলের মুখপাত্রের থেকেও মারাত্মক কাজ করছেন উনি। যে কাজ অমিত শাহও করেন না। এর পরই ধনখড়ের উদ্দেশে মমতার সতর্কবাণী, ‘‘নিজেকে সামলান।’’
বছরখানেক আগে ধনখড় বাংলায় রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই সরকারের সঙ্গে প্রায় নিয়মিত তাঁর সংঘাত বাড়ছে। কখনও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে, কখনও উপাচার্যদের ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে চাওয়া নিয়ে, কখনও বা রাজ্যের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদক্ষেপ সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। শাসক তৃণমূলও তাঁকে ‘বিজেপির দালাল’ থেকে শুরু করে সংবিধান বহির্ভূত বহু পদক্ষেপ করার দায়ে অভিযুক্ত করেছে। একাধিক বার ধনখড়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বিরোধ বেধেছে মুখ্যমন্ত্রীরও। আবার দু’কদম এগিয়ে এক কদম পিছনোর মতো উভয় পক্ষই কাজ চালানোর বোঝাপড়া করে নিতে চেয়েছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী যে তীব্রতায় রাজ্যপালকে বিদ্ধ করলেন, তা অতীতের সব উদাহরণকে ছাপিয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের হেমতাবাদে এক বিধায়কের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই রাজ্যপাল তাকে ‘রাজনৈতিক খুন’ বলতে চাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে হুশিয়ারি দেন, ‘‘হয় ওঁকে প্রমাণ করতে হবে এটা রাজনৈতিক খুন, না-হলে রাজ্যপাল পদে থাকার যোগ্যতা ওঁর নেই।’’ রাজভবন এ দিন এ নিয়ে মুখ না খুললেও ধনখড়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বাঁকুড়ায় তিনি বলেন, ‘‘খুন না আত্মহত্যা, তা প্রমাণ করার দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর লোকেরা খুন করবেন, আর অন্য লোকে তা প্রমাণ করবেন!’’
আরও পড়ুন: সত্যিই ৩৫৬? নাকি শুধু চাপ বাড়ানো? সুর কিন্তু বদলে গিয়েছে বিজেপির
কয়েকদিন আগে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল-আচার্য। বিষয়: বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পঠনপাঠন ও পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ। রাজ্য শিক্ষা দফতরের অনুমোদন না-থাকায় উপাচার্যেরা বুধবারের সেই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেননি। রাজভবন-নবান্ন বিরোধের আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে তাকে ঘিরেও। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ দিন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তীক্ষ্ণ ভাষায় আক্রমণ শানান। তিনি বলেন, ‘‘কেউ আমাকে আঘাত না-করলে সাধারণত কাউকে আমি আক্রমণ করি না। কিন্তু এটা একতরফা হয়ে যাচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: দুর্গামণ্ডপে ২৫ জনের ঢোকার অনুমতি, পরতে হবে মাস্ক, তৈরি হল রূপরেখা
রাজ্য সরকারের সম্পর্কে অসহযোগিতার ইঙ্গিত করে রাজ্যপাল এ দিন বলেছেন, ছয় মাস হয়ে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা তাঁর একটি চিঠির জবাব এখনও তিনি পাননি। তাঁরই পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মমতার বক্তব্য, ‘‘আমি না কি ওঁর চিঠির উত্তর দিই না।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে