জোড়াসাঁকোর মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি:ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আগেই মন্তব্যটা করেছিলেন। শনিবার এক বার্তায় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, বিজেপির টাকায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এ বার একই কথা বললেন তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে এ দিন মিছিলের ডাক দেয় তৃণমূল। মমতার নেতৃত্বে সেই মিছিল রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো যায়। জোড়াসাঁকো পৌঁছে মমতা মঞ্চ থেকে দাবি করেন, বিজেপির টাকাতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলছে।
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ তৃণমূলের মিছিল রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকোর উদ্দেশে রওনা হয়। বেলা দুটো নাগাদ মিছিল গিয়ে পৌঁছয় জোড়াসাঁকোয়। সেখানে পৌঁছে মঞ্চ থেকে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। ওই দুই ইস্যুতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই অশান্তি ছড়িয়েছে। রেল-রাস্তা অবরোধের পাশাপাশি ট্রেনে-বাসে-স্টেশনে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। মমতাকে ওই মঞ্চ থেকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা হিংসা সমর্থন করি না। আমার কাছে প্রমাণ আছে, কেউ কেউ বিজেপির টাকা খেয়ে এ দিক ও দিক আগুন জ্বালাচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেউ দয়া করে ট্রেনে আগুন জ্বালাবেন না। বার বার বলছি, ট্রেনে আগুন দেবেন না। পোস্ট অফিসে আগুন দেবেন না। রাস্তায় আগুন দেবেন না। যাঁরা আপনার পক্ষে রয়েছেন, তাঁদের সমস্যা ফেলছেন কেন?’’
তৃণমূলের ডাকা এ দিনের মিছিলে মমতা সকলকেই আহ্বান জানিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, দেশ যখন বিপদে পড়ে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলকে কাজ করতে হয়। সেই মিছিল রেড রোডে বিআর অম্বেডকরের মূর্তির সামনে থেকে রওনা হওয়ার আগে মমতা সকলকে দিয়ে শপথ করিয়ে নেন। মমতার সঙ্গে সকলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা সবাই নাগরিক। সর্ব ধর্ম সমন্বয়ই আমাদের জীবন আদর্শ। কাউকে বাংলা ছাড়তে দেব না। নিশ্চিন্তে থাকব। শান্তিতে থাকব। বাংলায় এনআরসি ও ক্যাব করতে দিচ্ছি না। দেব না। শান্তি রাখতে হবে।’’ এর পর মিছিল জোড়াসাঁকোয় পৌঁছলে মমতা মঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আমরা সবাই নাগরিক। আপনি আবার কিসের নাগরিকত্ব দেবেন?’’
আরও পড়ুন:রাজ্যে কোথাও অশান্তি-অবরোধে পড়লে ফোন করুন এই নম্বরগুলিতে
আরও পড়ুন:আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে এই আইন প্রয়োগ করতে হবে: মমতা
নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি শুরু হয়েছে। সেই অশান্তি চার দিনে পড়েছে সোমবার। পরিস্থিতি সামলাতে তাঁর প্রশাসন ব্যর্থ বলে মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা শুরু করেছে বিরোধীরা। সেই আবহে মমতা এ বার গন্ডগোলের যাবতীয় দায় বিজেপির ঘাড়েই চাপিয়ে দিলেন। ঠিক যেমন ভাবে শনিবার ফিরহাদ হাকিম দিয়েছিলেন। ওই দিন মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘অরাজকতা করে বাংলায় বিজেপির হাত শক্ত করবেন না। পথ অবরোধ করে, বাস জ্বালিয়ে বাংলার মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। বিজেপির টাকায় বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে। কিছু মানুষ প্ল্যান করে এটাকে করাচ্ছে। আর আপনারা অরাজকতা করে বাংলায় বিজেপির হাত শক্ত করছেন।’’