‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের টাকা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
গঙ্গা ভাঙন রোখার কাজে কেন্দ্রের ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের টাকা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নীতি আয়োগের সামনে দাখিল করতে এবং প্রয়োজনে কেন্দ্র থেকে টাকা আনতে সেচ সচিবকে দিল্লিও যেতে বলেন তিনি। মুখ্যসচিবকে পুরো বিষয়টি দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মালদহ, মুর্শিদাবাদে গঙ্গার ভাঙন এখন প্রশাসনের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার মালদহে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকেও বিভিন্ন এলাকার বিধায়ক থেকে সরকারি আধিকারিকদের কথায় বারবার উঠে আসে সেই ছবি। প্রথমেই বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার জানান, ভাঙনের ফলে তিনটি হাইস্কুলে এসে উঠেছেন ভিটেহারারা। ফলে স্কুল খোলা যাচ্ছে না। তখনই মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ভাঙন হয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ এলাকায়, যা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। এর পরে একে একে ভাঙনের প্রসঙ্গ তোলেন সমর মুখোপাধ্যায়, সাবিত্রী মিত্ররা।
এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গা ভাঙনকে ‘কেন্দ্রের বিষয়’ বলে উল্লেখ করে তা ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন বড় সমস্যা। কেন্দ্রের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। ভাঙন ঠেকাতে মাস্টার প্ল্যান করা উচিত।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘নমামি গঙ্গে প্রকল্পে এটা ঢোকানো উচিত।’’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করছে না। আগে কেন্দ্র থেকে ফ্লাড ম্যানেজমেন্টে বা বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে টাকা আসত। কিন্তু এখন সে টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফরাক্কা ব্যারাজে ড্রেজিংও করছে না।’’
মুখ্যমন্ত্রী এর পরে মুখ্যসচিবকে বলেন, ‘‘এটা নিয়ে নীতি আয়োগের সঙ্গে কথা বলুন। কেন্দ্রকে বিষয়টি লিখে জানান। কেন্দ্র থেকে টাকা আনতে সেচ সচিবকে দিল্লিতে পাঠান, তিনি গিয়ে কথা বলে আসুন।’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাঙন মোকাবিলায় বিকল্প পরিকল্পনা আমাদের ভাবতে হবে। ভাঙন এলাকায় মানুষ যাতে বসবাস না করে, পাকা বাড়ি তৈরি না করে, সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’’
এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী আরও এক বার জানান, রাজ্যের হাতে এখন একেবারে টাকা নেই। মঙ্গলবার দুই দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে যেমন বলেছিলেন, তেমনই এ দিনও তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন চিন্তা করতে হয়, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্টুডেন্ট কার্ডের টাকা আসবে তো?’’ তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র এখন কোনও টাকা দেয় না। মঙ্গলবারও তিনি বলেছিলেন, এতগুলি জনমুখী প্রকল্প চালাতে প্রচুর টাকা লাগে। তাই বিধায়কদের দু’বছর নতুন কোনও প্রকল্প চাইতেও মানা করেন। বলেন, ‘‘বিধায়করা পরিস্থিতি বুঝতে শিখুন।’’ সেই সূত্রেই ‘ধমক’ দেন আব্দুল করিম চৌধুরী, গৌতম পালকে। এ দিন সেই প্রসঙ্গে আসানসোলের সাংসদ অগ্নিমিত্রা পাল পাল্টা বলেন, ‘‘তা হলে আগে যে শিল্প ও কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সব ভুয়ো? আপনি লক্ষ্মীর ভান্ডারে ৫০০ টাকা দিয়ে ভোট কিনতে চান?’’