আদিবাসী দিবসের প্রস্তুতি ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
বিগত লোকসভা ভোটের ‘ক্ষত’ ভরাট হয়েছে। এ বার বিধানসভায় জঙ্গলমহলের উজাড় করা সমর্থন পেয়েছে তৃণমূল। ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি আসনেই ফুটেছে ঘাসফুল। বিপুল সেই জয়ের পরে আজই প্রথম ঝাড়গ্রামে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিশ্ব আদিবাসী দিবসে রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন তিনি।
এই দিনটিতে দু’বছর বাদে ঝাড়গ্রামে আসছেন মমতা। ২০১৮ সালে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। জঙ্গলমহল জুড়ে গুচ্ছ উন্নয়নকাজের ঘোষণা করেছিলেন। সে বারই সাঁওতালি সিনেমার অভিনেত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে সংর্বধনা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বিরবাহা এ বার ঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রতীকে জিতে বিধানসভায় গিয়েছেন। হয়েছেন বন-প্রতিমন্ত্রী। এ বারও আদিবাসী সম্প্রদায়ের কৃতী ব্যক্তিত্বদের সংবর্ধনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি কী বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে জঙ্গলমহল। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘দিদি সবসময়ই আদিবাসী দরদি। ঝাড়গ্রামের আদিবাসী মানুষজন দিদির প্রাণ। দিদি আসা মানেই উন্নয়নের ঘোষণা।’’
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির মতো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও সরকারি ভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ফলে, জঙ্গলমহলের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ ঘটতে চলেছে কিনা, সেই চর্চাও শুরু হয়েছে। ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ভোলানাথ মাহাতো মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে আমরা তো তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলাম।’’ মন্ত্রী বিরবাহার মা ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-র নেত্রী চুনিবালা হাঁসদা অবশ্য আমন্ত্রণ পাননি। চুনিবালা বলেন, ‘‘আমাকে ডাকেনি। বাঁকুড়ায় আদিবাসী দিবসের অন্য অনুষ্ঠানে যাব।’’
আজ, সোমবার ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ সংলগ্ন হেলিপ্যাডে বেলা একটায় মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার নামার কথা। তারপর স্টেডিয়ামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। করোনা আবহে সীমিত সংখ্যক লোকজন নিয়ে হবে অনুষ্ঠান। যাঁরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের সকলের করোনা পরীক্ষাও করা হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী কোনও আদিবাসী গ্রাম পরিদর্শনে যেতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। রাতে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি সংলগ্ন ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার বেলা ১১ টা নাগাদ ঝাড়গ্রাম থেকে বেরিয়ে তাঁর ঘাটাল যাওয়ার কথা। মুখ্যমন্ত্রীর দু’দিনের সফর ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।