প্রতীকী ছবি।
কোভিডে মরিনি আমরা, উৎসব নিয়ে ঘর করি। আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে এটাই হতে পারে সিনেমাপ্রেমী বাঙালির আপ্তবাক্য। সে দিনই নজরুল মঞ্চে বিকেল ৪টেয় ২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কোভিড পরিস্থিতিতে এমনটাই হয়ে থাকে। উৎসব প্রথমে হওযার কথা ছিল শীতকালে, ১৪ থেকে ২৭ জানুয়ারি। গত ৪ জানুয়ারি তা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার পরই উৎসবের চেয়ারপার্সন রাজ চক্রবর্তী এবং কেউ কেউ করোনায় আক্রান্ত। অতঃপর পিছোতে পিছোতে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ।
সত্যজিৎ রায় অবশ্য তাঁর জন্মশতবর্ষে ধ্রুবতারা হয়েই থাকছেন। আগের ঘোষণামাফিক উদ্বোধনী ছবি ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। তবে সেটি নেতাজী ইন্ডোরে দেখা যেত। এ বার নজরুল মঞ্চে। গত কয়েক বছর ধরে উৎসবের সমাপ্তি-অনুষ্ঠান নজরুল মঞ্চে হয়, এ বার উদ্বোধনও। যাক, নব্য স্বাভাবিকতায় এ নিয়ে কী আসে যায়! সিনেমাটা তো
পর্দায়-টিভিতে-ভিসিআরে-ইউটিউবে লোকের বহু বার দেখা! উদ্বোধনের সন্ধ্যায় মঞ্চে কাদের দেখা যাবে,
সেটাই কথা।
শতবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘে সত্যজিৎ আছেন, আছেন তাঁর ফিল্ম সোসাইটির বন্ধু চিদানন্দ দাশগুপ্ত। অরিন্দম শীল জানালেন, মে দিবসের দিন সত্যজিতের ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে অনুষ্ঠান। সত্যজিৎ স্মারক বক্তৃতায় থাকবেন সর্দার উধম সিংহ খ্যাত পরিচালক সুজিৎ সরকার।
যদি উধম থাকেন, নেতাজিই বা নন কেন? হরনাথ চক্রবর্তী জানালেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে এ বার সুভাষচন্দ্রকে নিয়ে দু’টি ছবি দেখানো হবে। একটি পীযূষ বসুর সাদা-কালো ‘সুভাষচন্দ্র’, অন্যটি শ্যাম বেনেগালের বোস: দ্য ফরগটন হিরো।
থাকবে সদ্যপ্রয়াতদের স্মরণার্ঘও। দিলীপকুমারের মুঘল-এ-আজম থেকে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের উত্তরা, গৃহযুদ্ধ থাকবে। থাকবে গদারের নায়ক জা পল বেলমোন্দো থেকে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের পর্দা-উপস্থিতি। কে না জানে, সেই নবদ্বীপ, মিথিলার যুগ থেকে আজকের নন্দন সর্বত্র বাঙালির সংস্কৃতি মুখ্যত স্মার্ত। স্মৃতিই তার প্রধান অবলম্বন! নতুন খবর একটিই. গৌতম ঘোষ জানালেন, টালিগঞ্জের চলচ্চিত্র শতবার্ষিকী ভবনে যে সব ছবি আছে, ফিচার ফিল্ম থেকে ডকুমেন্টারি নিউজ রিল অবধি সবই পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সাহায্যে ডিজ়িটাইজ় করার পথে। অনেকটা কাজ হয়ে গিয়েছে। সেখানকার অডিটোরিয়ামে এখন নন্দনের মতো নিত্য সিনেমা দেখা যাবে। মানে, আর একটা সরকারি হল!
আসল কথাটা নন্দন অধিকর্তা মিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ফিরে এল। গ্রীষ্মকালে উৎসবের নানা অসুবিধা। স্যানিটাইজারের পাশাপাশি সঙ্গে পর্যাপ্ত জল রাখুন। নন্দনচত্বরের লাইনে তো দুপুরের রোদ দয়ামায়া করবে না। সাধে এলিয়ট এপ্রিলকে নিষ্ঠুরতম মাস বলেছিলেন!