Mamata Banerjee

‘চাকরির কোটা কেউ কেউ পকেটে পুরেছিলেন পুরুলিয়ায়’, নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত কার দিকে

নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্যে তদন্ত চলছে। সেই আবহে পুরুলিয়ায় চাকরির কোটা ‘পকেটে পুরে ফেলার’ অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩২
Share:

পুরুলিয়ায় চাকরির কোটা ‘পকেটে পুরে ফেলার’ অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তের আবহে পুরুলিয়ায় চাকরির কোটা নিয়ে ‘কেলেঙ্কারি’র অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার মালদহে প্রশাসনিক সভা করেন তিনি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, পুরুলিয়ার যুবকদের চাকরির কোটা ‘কেউ’ পকেটে ঢুকিয়েছেন। অনেকের মতে, ‘কেউ’ বলতে মমতা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেই ইঙ্গিত করেছেন। শুভেন্দু তৃণমূলে থাকাকালীন মমতা তাঁকে পুরুলিয়ায় দলের পর্যবেক্ষক করেছিলেন। মালদহে মমতা বলেন, ‘‘কয়েকটা ডাকাত-গদ্দার আমার দল থেকে বিদায় নিয়েছে। ওরাই এই কাজ করেছিল।’’

Advertisement

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টের কাছেও মৌখিক ‘আর্জি’ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মাননীয় আদালতকে দু’পায়ে প্রণাম করে বলব, খোঁজ নিয়ে দেখুন।’’ পাশাপাশি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘কেউ অন্যায় করলে তার দায়িত্ব নেব না।’’

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য-সহ শিক্ষা দফতরের অনেক কর্তা। দিন কয়েক আগে গ্রেফতার করা হয়েছে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে। গ্রেফতারির পর পার্থের পাশে দাঁড়াননি মমতা। মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ থেকে তাঁকে অপসারিতও করা হয়। আদালতের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির পদ খুইয়েছেন মানিক। কুন্তলের বিরুদ্ধেও দল ব্যবস্থা নিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। এই আবহে মঙ্গলবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা। বললেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। আমি কিছু বলিনি। আশা করি ভাল বিচার হবে। সাময়িক ভাবে কেউ কেউ ভুল বুঝতে পারেন। কেউ অন্যায় করলে তার দায়িত্ব নেব না।’’ অর্থাৎ, দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর দল যে কোনও আপস করবে না, সে কথা আরও এক বার যেমন ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন মমতা, তেমনই দলের একাধিক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষ যাতে তাঁকে ‘ভুল না বোঝেন’, সে ব্যাপারেও বার্তা দিলেন।

Advertisement

দুর্নীতি নিয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার পর পরই পুরুলিয়ায় চাকরি কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ টানেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘নিজেরা লুকিয়ে লুকিয়ে কী করছ? কয়েকটা ডাকাত-গদ্দার আমার দল থেকে বিদায় নিয়েছে। পুরুলিয়ার যুবকদের চাকরির কোটা কেউ কেউ পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিলেন।’’ একটা সময়ে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু। তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁকে ‘গদ্দার’ বলেই কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

মমতার এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যেই দল ছাড়লেন, তাঁরা চোর-ডাকাত হয়ে গেল। আপনার সঙ্গে থাকলে চোর-ডাকাত নয়। এটা কী ধরনের রাজনীতি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement