মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নিয়ে আপাতত চিন্তার কোনও কারণ নেই। মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতায় ফিরে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে ‘প্রাইভেট চক্র’ নিয়ে সকলকে সতর্ক করলেন তিনি। নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের ‘আকাশছোঁয়া বিল করার’ প্রবণতাকে নিশানা করেছেন।
গঙ্গাসাগর থেকে হেলিকপ্টারে হাওড়ার ডুমুরজলাতে নেমে মুখ্যমন্ত্রী নতুন ‘চিনা ভাইরাস’ নিয়ে রাজ্যের মানুষকে নিশ্চিন্তে থাকতে বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভাইরাস নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। যদি কোনও চিন্তার কারণ হয়, তবে তা আমরাই জানিয়ে দেব।’’ ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস এবং তার সংক্রমণ নিয়ে প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে, তা-ও জানান মমতা। এর পাশাপাশিই সকলকে ‘প্রাইভেট চক্র’ নিয়ে সচেতন করলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘কিছু প্রাইভেট চক্র আছে, যারা টাকা কামানোর জন্য একটু জ্বর হলেই ভয় দেখিয়ে দিচ্ছে।’’ সেই ফাঁদে না পড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি চিনে এইচএমপিভি-র একটি রূপের সংক্রমণ বেড়েছে। তার পর থেকেই উদ্বেগ দানা বেঁধেছে ভারত-সহ অন্যান্য দেশে। চিনের এই পরিস্থিতির মাঝে ভারতেও এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণের খবর আসতে শুরু করেছে। প্রথমে বেঙ্গালুরুর দুই শিশুর শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার খবর মেলে। তাদের এক জনের বয়স আট মাস, অপর জনের তিন মাস। বেঙ্গালুরুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উদ্বেগ আরও বৃদ্ধি পায় মানুষের মনে। বেঙ্গালুরুর দুই শিশুর পাশাপাশি অহমদাবাদের এক শিশু এবং মুম্বই থেকে কলকাতা আসা এক শিশুরও এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। পাশাপাশি তামিলনাড়ুতেও এই ভাইরাসে সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে আরও দুই শিশুর শরীরে নতুন ভাইরাসের সংক্রমণের খবর মিলেছে।
অনেকেই বছর চারেক আগের করোনা-আবহের কথা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তবে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফেও ভাইরাস নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সোমবারই এই ভাইরাস নিয়ে সব রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্র। সব রাজ্যকে শ্বাসজনিত অসুস্থতার উপর আরও বেশি করে নজর রাখা এবং পর্যালোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে। সাধারণত শীতকালে শ্বাসজনিত অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকে বলেও বৈঠকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব।
এইচএমপিভির সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতা বৃদ্ধিরও প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষ করে সাবান এবং জল দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাত চোখে, নাকে বা মুখে না দেওয়া, হাঁচি-কাশির সময়ে নাক-মুখ ঢেকে নেওয়ার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, যাঁদের শরীরে কোনও উপসর্গ রয়েছে, তাঁদের খুব কাছাকাছি না যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।