মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে রাজ্য জুড়ে ‘মেগা বণ্টন’ কর্মসূচি নিল নবান্ন। আগামী বৃহস্পতিবার হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিভিন্ন জেলায় বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে এলাকা ভিত্তিক সরকারি প্রকল্পের সেই সব সুবিধা বণ্টন করবেন তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়কেরা। যে কেন্দ্রে তৃণমূলের বিধায়ক নেই সেখানকার কর্মসূচিতে থাকবেন স্থানীয় পুর-প্রশাসন অথবা প্রশাসনের কর্তারা।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বিলি এবং প্রশাসনিক বৈঠকের মতো নতুন কর্মসূচি শুরু করেছেন মমতা। এ বার পঞ্চায়েত ভোটের আগে সেই কর্মসূচিতে এক সঙ্গে গোটা রাজ্যকে বেঁধে ফেলতে চলেছে শাসক শিবির। এই কর্মসূচি নতুন না হলেও এতদিন জেলা ভিত্তিক কেন্দ্রীয় ভাবে এই বণ্টন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অল্প কিছুদিন হল সেই কর্মসূচির পরে সংশ্লিষ্ট জেলায় বন্টনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ বার ভোটের মুখে গোটা রাজ্যে এক সঙ্গে ‘কল্যাণবার্তা’ দিতে শাসক শিবিরের তরফে এই পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘সব বিধানসভায়, ব্লকে এই বিলি বণ্টন কর্মসূচি হবে।’’ তিনি জানান, শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন জায়গায় থাকবেন। কোথাও তাদের বিধায়ক না থাকলেও অন্য প্রতিনিধিরা থাকবেন।
প্রশাসনের দাবি, মালদহের ১২টি বিধানসভায় সুবিধা প্রদান কর্মসূচি হবে। মালদহের দুর্গাকিংকর সদনে জেলাস্তরের কর্মসূচি হবে। জেলাশাসক নিতিন সিংহনিয়া বলেন, “৩১ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী গাজল কলেজ মাঠ থেকে সুবিধা প্রদান করেছেন। নতুন করে ক্যাম্পের ফলে আরও কিছু উপভোক্তা রয়েছেন। তাঁদের ৯ তারিখ দেওয়া হবে।” মালদহের ইংরেজবাজার, গাজল, হবিবপুর বিধানসভা বিজেপির দখলে রয়েছে। প্রশাসনের একাংশের দাবি, সে বিধানসভাগুলিতে বিডিও সুবিধা দেবেন।
কোচবিহারে বিজেপির ছ’জন বিধায়ক রয়েছেন। কিন্তু সেখানে কাউকে কোনও কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক সুকুমার রায় বলেন, ‘‘আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’’ কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দিয়ে বিলি কর্মসূচি হবে। অথচ, আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এ সবের কোনও মানে নেই। সরাসরি টাকা উপভোক্তাদের দেওয়া উচিত।’’ মালদহের বিজেপি বিধায়ক গোপাল সাহা বলেন, "সরকারি অনুষ্ঠানে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের ব্রাত্য রাখা তৃণমূল সরকারের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।"
আজ বুধবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে রাজ্যপালের বক্তৃতায়। প্রাথমিক ভাবে পরের দিন বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের বক্তৃতার উপর আলোচনা শুরুর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে খবর, সরকারি কর্মসূচির কারণে ওই দিন বিধানসভার অধিবেশন হচ্ছে না। আলোচনা শুরু হবে পরদিন শুক্রবার। শোক প্রস্তাব গৃহীত হবে রাজ্যপালের বক্তৃতার পরেই।