শ্রমিক সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। নিজস্ব সংবাদদাতা।
যাদবপুর-কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে চার দিন। এ ক’দিনে শাসকদলের সঙ্গে রাজ্যপালের বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। দু’তরফেই একাধিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু, শাসকদলের প্রধান তো বটেই সরকারের প্রধান হিসাবেও মমতা কোনও মন্তব্য করেননি। সোমবার দলীয় শ্রমিক সংগঠনের মঞ্চ থেকে এ প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খুললেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, গায়ের জোরে যা ইচ্ছা তাই করছে বিজেপি। একই সঙ্গে নাম না করে বিঁধেছেন বাবুল সুপ্রিয়কেও।
এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে। সেখানে প্রধান বক্তা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যে প্রথমেই উঠে আসে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিলগ্নিকরণ নীতির কথা। এ প্রসঙ্গ তুলে মোদী সরকারকে আক্রমণও করেন তিনি। মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন। এর পর ধাপে ধাপে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে মমতা বলেন, ‘‘মানুষের কথা বলার জায়গা হারিয়ে যাচ্ছে। যেখানে যে প্ল্যাটফর্ম পাবেন, সেখানে প্রতিবাদ করুন।’’ ‘গণতন্ত্রই ভারতের মূলধন’ বলে এ দিন মন্তব্য করেন তিনি। এরই সঙ্গে তিনি জুড়ে এ দিন দেন যাদবপুর প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র থাকলেও, অনেক জায়গায় সেটা নেই। আপনারা তো দেখছেন অ্যাটিচিউড। সব জায়গায় গায়ের জোর দেখানো হচ্ছে। যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে কী করে এসেছে!’’
এখানেই থেমে থাকেননি মমতা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে কৌশলে বিঁধেছেন বাবুল সুপ্রিয়কেও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘একটা সময় পর্যন্ত মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখা যায় কিন্তু চিরকালের জন্য রাখা যায় না। আসানসোল-দুর্গাপুরের মানুষ ঢেলে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। বিজেপিকে জিতিয়েছেন। যদি আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করি, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ কোথায়? আসানসোলে। কোল ইন্ডিয়া কোথায়? দুর্গাপুরে। সেল কোথায়? দুর্গাপুরে।’’ রাজনৈতিক মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, আসানসোলে অবস্থিত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার দুরবস্থার কথা তুলে ধরে ঘুরিয়ে সেখানকার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কেই বিঁধেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাজীবের ছুটি নিয়ে বিভ্রান্তি! মেয়াদ শেষে কী করবেন ‘পলাতক’ গোয়েন্দা প্রধান, দেখতে চায় রাজ্যও
সমাবেশ মঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থাগুলির কর্মীদেরও কৌশলে বার্তা দিয়েছেন মমতা। সরকারি সংস্থাগুলিকে নিয়ে মোদী সরকার ‘গায়ের জোরে যা ইচ্ছে তাই করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি, রেল, এয়ার ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্কের মতো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একাধিক সংস্থার উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী বনাম মন্ত্রী, টলিউডে ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙতে নতুন সংগঠন বিজেপির