রাজভবন থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
বর্ধমান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মাথায় চোট লেগেছে। তা নিয়েই বুধবার সন্ধ্যায় রাজভবনে যান মমতা। সেখান থেকে বেরিয়ে জানান, যে ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে তাঁর মৃত্যুও হতে পারত। একটি গাড়ি ২০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে তাঁর কনভয়ে ঢুকে পড়েছিল। যে কারণে তাঁর চালক ব্রেক কষতে বাধ্য হন। এখনও মাথা টনটন করছে বলে জানান মমতা।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে মমতা জানান, রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর সদর্থক বৈঠক হয়েছে। তার পরেই তাঁকে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হয়। মমতার মাথায় ছোট ব্যান্ডেজ বাধা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘একটা গাড়ি আমার গাড়ির সামনে আচমকা চলে আসে। ২০০ কিলোমিটার বেগে ওই গাড়িটা যাচ্ছিল। আমার গাড়ি গলি দিয়ে বেরোচ্ছিল। আমার চালক বুদ্ধিমানের মতো জোরে ব্রেক কষে। পুরো ড্যাশবোর্ডটা এসে আমার মাথায় লেগেছে। একটু রক্তও পড়েছে। এখন ফুলে আছে সামান্য।’’
মাথায় এখনও ব্যথা করছে বলে জানান মমতা। বলেন, ‘‘মাথাটা এখনও টনটন করছে। তাই নিয়েই কাজ করলাম। আমার মনে হচ্ছে জ্বর আসছে। গা গোলাচ্ছে। হালকা ঠান্ডাও লাগছে। এখন একটু বাড়ি যাচ্ছি।’’
পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমার গাড়ির কাচ খোলা ছিল। যদি কাচ বন্ধ থাকত, আমার মৃত্যু হতে পারত। কাচ ভেঙে ড্যাশবোর্ড-সহ আমার সারা গায়ে ঢুকে যেত। মানুষের আশীর্বাদে বেঁচে গিয়েছি। আমি ওষুধ খেয়েছি। আপাতত হাসপাতালে যাচ্ছি না।’’
কোন গাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে ঢুকে পড়ে? সে প্রসঙ্গে মমতা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বলেন, ‘‘অনেক সময়ে অনেকে অন্য কারও গাড়ি ব্যবহার করে। সে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখুুক। আইনের হাতে ছেড়ে দিচ্ছি। এটা নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’
পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘কোন গাড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে ঢুকে পড়েছে, আমরা তদন্ত করে দেখছি।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার বর্ধমানের গোদার মাঠে প্রশাসনিক সভা ছিল মমতার। সভা শেষে কলকাতা ফেরার জন্য গাড়িতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। সভাস্থল থেকে চড়াই পথে জিটি রোডে ওঠার মুখে আচমকাই ব্রেক কষেন গাড়িচালক। সেই ঝাঁকুনিতেই কপালে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী। যদিও গাড়ি না-থামিয়ে মমতা সরাসরি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আঘাত পাওয়ার পরেই কপালে রুমাল বেঁধে নেন মমতা।
বর্ধমান থেকে হেলিকপ্টারে কলকাতায় ফেরার কথা ছিল মুুখ্যমন্ত্রীর। গিয়েও ছিলেন হেলিকপ্টারেই। কিন্তু সভা চলাকালীন আবহাওয়া খারাপ হতে শুরু করে। কুয়াশার পাশাপাশি চলছিল বৃষ্টিও। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী সড়কপথে কলকাতা ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। কলকাতায় ফিরেই তাঁর কনভয় সোজা গিয়েছে রাজভবনে। সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ি গিয়েছেন মমতা।