মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মহার্ঘভাতা (ডিএ) বাধ্যতামূলক নয়। ঐচ্ছিক। বাম আমলের থেকে তৃণমূল সরকার বেশি ডিএ দেয়। বুধবার বিধানসভায় এ কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ডিএ বাধ্যতামূলক নয়। ওটা ঐচ্ছিক বিষয়। সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের বেতন এক নয়।’’ এ রাজ্যের সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রের থেকে বেশি ছুটি পায় বলেও জানান মমতা। ডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন সরকারি কর্মচারী পরিষদ। তাদের বক্তব্য, মমতার বক্তব্য কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। এটা আদালত অবমাননার শামিল।
মহার্ঘভাতার বিষয়টি সরকার সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে পারে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘ডিএ নিয়ে আমরা সহানুভূতিশীল। এ নিয়ে প্রতিবাদ ঠিক নয়। কারও আপত্তি থাকলে কেন্দ্রীয় সরকারে গিয়ে যোগদান করুন। ক্ষমতায় আসার পর থেকে বামেদের থেকে বেশি ডিএ দিই। তার পরেও সাধ্য মতো দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’’ ডিএ নিয়ে আগের বাম সরকারকে খোঁচা দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘বাম সরকার কত ডিএ দিত? ওরা অনেক দেনা করে গিয়েছে। আমরা ২.৫৭ গুণ বেতন বৃদ্ধি করেছি। ষষ্ঠ বেতন কমিশনকে মান্যতা দিয়েছি। নতুন করে ৬ শতাংশ ডিএ দিচ্ছি।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ না দিলেও রাজ্য বেশি ছুটি দেয় বলে দাবি করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা বেশি ছুটি দেয় না। আমরা প্রায় ৪০ দিন ছুটি দিই।’’
ডিএ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি। সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ডিএ সম্পর্কে যা বলেছেন তা শুধু মিথ্যাচার নয়, আদালত অবমাননাও বটে। তা ছাড়া কেন্দ্রের মতো রাজস্থান, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অসম এবং উত্তরপ্রদেশ সরকার ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ দেয়। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, এখনও সময় রয়েছে ন্যায্য ডিএ মিটিয়ে দিক।’’ গত বছর কলকাতা হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের হারে ডিএ দেওয়ার রায় দেয়। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। এখন সেখানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আগামী বছর ৫ ফেব্রুয়ারি ওই মামলাটির শুনানি হতে পারে।