মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।
সর্বভারতীয় ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট) পরে সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তির পরীক্ষায় (জেইই-মেন) বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিভিন্ন পরীক্ষায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ফের জাতীয় শিক্ষানীতির সমালোচনা করে একতা-সম্প্রীতির বার্তা দেন। পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, সরাসরি রাজনীতির প্রসঙ্গে না ঢুকেও বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বার্তার ভিন্ন তাৎপর্য রয়েছে।
নিট পরীক্ষায় বাংলা ভাষাকে সুযোগ দিতে চিঠি লিখে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন বাংলায় ওই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। তবে জেইই-মেন পরীক্ষায় বাংলা অন্তর্ভুক্ত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গুজরাতি ভাষায় ওই পরীক্ষা দেওয়া গেলে কেন বাংলায় তা দেওয়া যাবে না। বরং প্রতিটি প্রাদেশিক ভাষায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকা উচিত।” এই বিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠিও দিয়েছে রাজ্য। জাতীয় শিক্ষানীতিতে একাধিক প্রাদেশিক ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্র। বাংলাকে কেন সেই তালিকায় জায়গা পায়নি, তা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পড়ুয়াদের উদ্দেশে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরীক্ষায় কে কোন স্থান অর্জন করল, তা জানার অধিকার প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর রয়েছে। অথচ, জাতীয় শিক্ষানীতিতে সেই পদ্ধতি থাকবে না বলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “পরীক্ষার্থীরা যে স্থান অধিকার করেন, তা তাঁদের কাছে গর্বের বিষয়। এই শিক্ষানীতি আমি মানি না।”
নবান্ন সভাঘর থেকে পরিচালিত ভার্চুয়াল সভায় ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে মমতা সৌভ্রাতৃত্ব এবং মনুষ্যত্বের পাঠ দেন মমতা। তিনি বলেন, “বাংলাকে ব্যঙ্গ, কটূক্তি, বদনাম, কুৎসা-অপপ্রচার করে যারা নিজেদের রাজনীতি করতে চায়, তাদের সঙ্গে আমি একমত নই। সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে, কোনও ভাগাভাগি যেন না হয়। মানবিকতা সবচেয়ে বড় ধর্ম, যে ধর্ম সবাইকে নিয়ে চলে। সব ভাষা, ধর্ম, মানুষকে ভালবাসব। অনেকেই রক্তদান করেন। সেই রক্ত কারও শরীরে গিয়ে জীবন বাঁচায়। রক্তে কারও নাম-জাতি-ধর্ম লেখা থাকে না। আমাদের পরিচয় হবে মনুষ্যত্ব।”