মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার নয়, রাজ্যের মন্ত্রিসভায় রদবদল হবে বুধবার বিকেলে। সোমবার দুপুরে নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে মমতা সাংবাদিক বৈঠক করেন ১২টা ৪৯ মিনিট নাগাদ। সেখানেই তিনি জানিয়ে দেন, মন্ত্রিসভার রদবদল হচ্ছে। বুধবার একটি ‘ছোট রিশাফল’ করবেন তিনি। সেখানেই ফাঁকা থাকা দফতরগুলির দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। তবে একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, কয়েক জন মন্ত্রীকে দলের কাজেও ব্যবহার করতে চান তিনি। সেক্ষেত্রে ওই মন্ত্রীদের মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে বলে অনুমান।
সোমবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠক এগিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় করার কথা জানিয়েছিল নবান্ন। বৈঠক শেষে মমতা সাংবাদিক বৈঠকে এলে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল মন্ত্রিসভায় কি রদবদল হচ্ছে? কারণ তার আগে পর্যন্ত রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল সোমবারই মন্ত্রিসভায় ঢেলে সাজাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। এমনকি নতুন মন্ত্রী হিসেবে কারা দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন, তারও একটি সম্ভাব্য তালিকা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। সেই আলোচনায় সম্ভাব্য মন্ত্রী হিসেবে উঠে আসছিল বাবুল সুপ্রিয় এমনকি পার্থ ভৌমিকের নামও। মমতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, মন্ত্রিসভার বদল দরকার। কারণ তাঁর একার পক্ষে এতগুলো দফতরের ভার সামলানো সম্ভব নয়। কিন্তু সেই বদল সোমবারের বৈঠকে হয়নি। মমতা বলেন, ‘‘আজ নয়, পরশু একটা ছোট রিশাফল করব।’’
বস্তুত এই বক্তব্যে মমতা এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজানো নিয়ে যে জল্পনা চলছিল, তা ঠিক নয়। তিনি মন্ত্রিসভায় ছোট রদবদল করবেন। তবে এই রদবদলে কারা জায়গা পাবে কারা পাবে না, কারও মন্ত্রিত্ব যাবে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘চার-পাঁচ জনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হবে। কয়েক জনকে দলের কাজে লাগানো হবে।’’
উল্লেখ্য, সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকার পর থেকেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। যেহেতু পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণের পর এটিই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক, তাই অনেকেই অনুমান করেছিলেন, এই সভা থেকে বড় বদলের ঘোষণা হতে পারে। অনুমানের কারণ অবশ্য মমতারই একটি মন্তব্য। কারণ গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর চারটি দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর মমতা বলেছিলেন, ‘‘পার্থদার কাছে যে যে দফতরগুলি ছিল, সেগুলি আপাতত আমার কাছে থাকছে। হয়তো কিছুই করব না, কিন্তু যত ক্ষণ না নতুন করে মন্ত্রিসভা গঠন করছি তত ক্ষণ এই দফতরগুলি আমার কাছে এসেছে।’’ মমতার এই মন্তব্য ঘিরেই তৈরি হয় জল্পনা।
পরে একটি সূত্রে এ কথাও জানা যায় যে, মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ করানোর ব্যাপারে জানিয়ে রাজভবনে একটি বার্তাও গিয়েছে। তবে ওই বক্তব্যের সত্যাসত্য যাচাই করতে পারেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে যেহেতু মমতার মন্ত্রিসভায় ইতিমধ্যেই দু’জন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সাধন পাণ্ডের মৃত্যু হয়েছে আর এ বার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও সরানো হল, তাই রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল সোমবারের বৈঠকে ওই প্রাক্তন মন্ত্রীদের দফতরের দায়িত্ব নতুন কোনও বিধায়কের হাতে দেওয়া হতে পারে।