স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে তাঁর সরকারের কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কোনও রোগীর যদি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না-থাকে, হাসপাতালই তা তৈরি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে সোমবারেই তাঁর সরকারের কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্প নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের জন্য দু’টি নতুন অ্যাডভাইজ়রি বা পরামর্শ-নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে সরকারি হাসপাতালের তরফে রোগীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়ে দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে জানানো হয়েছে, রোগী প্রকল্পের কোন প্যাকেজের আওতায় চিকিৎসা পাবেন, তা দ্রুত ঠিক করতে হবে। তার জন্য রোগ নির্ণয়ের খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, রোগী ভর্তি হওয়ার পরে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম তাঁকে বেশ কয়েক দিন নির্দিষ্ট প্যাকেজের আওতায় আনছেই না। যদিও রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পে ১৯০০-র বেশি চিকিৎসা প্যাকেজ রয়েছে। অভিযোগ, বহু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম অহেতুক কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছে। তার পরে যখন রোগ নির্ণয় হয়, তত ক্ষণে বাড়তি খরচের বোঝা চেপে যায়। প্রতিদিনের সেই বাড়তি বোঝা বইতে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের বিপুল টাকা খরচ হচ্ছে। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, প্রতিদিন প্রায় আট কোটি টাকা (মাসে আড়াইশো কোটির কাছাকাছি) খরচ হচ্ছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে।
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “দ্রুত রোগ নির্ণয় করে রোগীকে নির্দিষ্ট প্যাকেজের আওতায় আনলে অহেতুক খরচের বোঝা কমে। আবার দ্রুত ঠিকঠাক চিকিৎসা শুরু করলে রোগীও তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারেন।” ছোট-বড় মিলিয়ে ২৩৩০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম রয়েছে স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়। নতুন নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ওই সব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে রোগীর পরীক্ষার জন্য পাঁচ হাজার টাকার বেশি খরচ করা যাবে না। শয্যা, ওষুধের খরচও হতে হবে নির্দেশিকা অনুযায়ী। আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগ বা সমস্যা নির্ণয় করতে হবে।
অন্য দিকে, সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে গেলে এ বার থেকে স্বাস্থ্যসাথী, রাজ্য বা কেন্দ্রের হেল্থ স্কিম, ইএসআই প্রকল্প— যে-কোনও একটি কার্ড দেখাতে হবে। কার্ড আনতে ভুলে গেলে আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী ওয়েবসাইট থেকে প্রকল্পের ‘ইউআরএন নম্বর’ সংগ্রহ করা হবে। যাঁদের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার কোনও কার্ড নেই, তাঁরা অন্য সরকারি পরিচয়পত্র জমা দেবেন। পিপিপি মডেলের পরীক্ষা কেন্দ্রেও একই নিয়ম বহাল থাকবে।