বাগডোগরায় মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটের পরে রাজ্যে বিরোধীদের যাতে কোনও রাজনৈতিক ‘জমি’ না থাকে তার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাই সোমবার শিলিগুড়িতে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক কর্মশালায় তিনি দলের ছাত্র-যুব সংগঠনকে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশও দিলেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ছাত্র এবং যুবকদের আমি অনুরোধ করব, আগামী পঞ্চায়েত ভোটে প্রত্যেকটা জেলায়, প্রত্যেকটা ব্লকে, গ্রামে এমন করে লড়াই করুন যাতে আজকে যাঁরা মেকি কান্না কাঁদছে, আগামীতে রাজনৈতিক ভাবে কাঁদার জায়গাও যেন তারা না পায়।’’ পঞ্চায়েত ভোটের পরে লোকসভার লক্ষ্যও বেঁধে দিয়েছেন মমতা। কর্মী-সমর্থকদের ভিড়ে ঠাসা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আগামী বছর লোকসভা ভোটে বাংলা-ই গোটা দেশকে পথ দেখাবে। এদিনের সভায় লক্ষাধিক জনসমাগম হয়েছিল বলে তৃণমূলের দার্জিলিঙের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস ও জেলা সভাপতি গৌতম দেবের দাবি।
ভিড়ে ঠাসায় সভায় তৃণমূল নেত্রী পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যকে ‘বিরোধী শূন্য’ করাই তাঁর দলের লক্ষ তা মুখ্যমন্ত্রী থেকে দলের যুব সভাপতি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সকলের বক্তব্যেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘সব বুথে বিরোধীদের জব্দ করতে হবে।’’ পঞ্চায়েতে সফল হওয়ার ‘ওষুধ’ও বাতলে দেওয়া হয়েছে এ দিনের সভা থেকে। সরকারি কোনও প্রকল্পের সুবিধে থেকে কাউকে বাদ পড়তে দেখলে অথবা যে বাসিন্দাদের যে কোনও সমস্যা-বিপদ জেনে দলের কর্মীদের প্রশাসনকে জানানোর কথাও বলা হয়েছে। সেই কাজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ছাত্র-যুবদের ওপর।
পঞ্চায়েতের পরেই লোকসভা ভোট। দিল্লির রাজনীতিতে চর্চা চলছে, লোকসভা ভোট এগিয়েও আনা হতে পারে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এ দিন কর্মী সমর্থকদের বলেছেন, ‘‘মমতা রথে উঠেছেন। সেই রথের দড়ি টেনে বাংলার কর্মী-সমর্থকদের দিল্লি পৌঁছে দিতে হবে।’’ লোকসভায় সাংসদ সংখ্যার নিরিখে প্রথম চারটি দলের মধ্যে রয়েছে। আগামী লোকসভা রাজ্যে আসন সংখ্যা আরও বাড়লে সরকার গঠনের নির্ণায়ক জায়গায় তৃণমূল পৌঁছে যেতে পারে বলে দলের নেতাদের আলোচনা। সেটি যে নেহাতই আলোচনা নয় তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, ‘‘এতদিন লড়াই ছিল সিপিএমের সঙ্গে। আগামীতে লড়াই হবে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আটকাতে।’’ সভার শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘২০১৯ এ দেশে লোকসভা ভোট। বাংলাই ভারতবর্ষকে পথ দেখাবে।’’