Mamata Banerjee in Raj Bhavan

রাজভবনে ‘সদলে’ গেলেন মমতা, জলস্পর্শও করলেন না! বললেন, ‘রাজ্যপাল আগে নিজের দিকে দেখুন’

রাজ্যপালের অতিথি হিসাবে রাজভবনে গেলেও রাজ্যপালের সঙ্গে নিজে গিয়ে দেখা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। পরে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসই সস্ত্রীক তাঁর কাছে এসে সাক্ষাৎ করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ১৯:৪৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

রাজভবনে শ্লীলতাহানির ঘটনার পরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘রাজভবনে আর একা যাওয়া যাবে না।’’ তার মাস তিনেক পরে স্বাধীনতা দিবসের বিকেলে রাজভবনের চা-চক্রে যোগ দিতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে ‘একা’ নয়। ‘সদলে’। মমতা বললেনও, ‘‘আমি বলেছিলাম, একা আসতে সমস্যা আছে। আমি ১০-১২ জনের দল নিয়ে এসেছি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাজভবনে গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ছিলেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিক, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্যপুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, প্রাক্তন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকেই।

Advertisement

তবে সপার্ষদ রাজভবনে গেলেও রাজভবনে গিয়ে জলস্পর্শও করেননি মমতা। বোতলে করে জল নিয়ে গিয়েছিলেন। রাজভবনের তরফে দেওয়া দল বা খাবার— কোনওকিছুই ছুঁয়ে দেখেননি মুখ্যমন্ত্রী। পরে বাইরে বেরিয়ে মমতা বলেই দেন, ‘‘আমি ওখানে এক ফোঁটা জলও খাইনি।’’

বৃহস্পতিবার মমতা রাজভবনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের আমন্ত্রণেই। ঘটনাচক্রে, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। ববৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালের হামলা-বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরেও দেখেছিলেন রাজ্যপাল। তার পরেই রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। মমতা রাজভবনে ঢোকার সময় তার পাল্টা জবাব দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মমতা প্রথমে বলেন, ‘‘রাজভবনে মন্ত্রিসভার শপথ হলে তো আসতেই হবে। কোনও উপায় নেই। কিন্তু এমনি আমি আর আসব না।’’ তার পরেই টেনে আনেন রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রসঙ্গ। রাজ্যপালের নাম না করে মমতা বলেন, ‘‘আজ ১৫ অগস্ট। স্বাধীনতা দিবস। এই দিনে অনেকে অনেক রাজনীতি করেছেন। অনেক কিছু বলেছেন। আমি শুধু বলব ‘চ্যারিটি বিগিন্‌স অ্যাট হোম’। আগে নিজের দিকে তাকান। রাজভবনে ওই যে একটা মেয়ে, এক জন কর্মী, তার ঘটনাটা তো আপনারা সবাই জানেন। আগে তো নিজের দিকে দেখতে হবে। তার পরে তো অন্যদের সমালোচনা করবেন।’’

Advertisement

রাজভবনের থ্রোন রুমে চা-চক্র ছিল। মমতা সেখানে পৌঁছনোর পরে নিজের পরিচিতদের সঙ্গে আলাপচারিতা শুরু করেন। তার পরে রাজভবনের পোর্টিকোয় নিজেই চেয়ার টেনে বসেন। ৪৫ মিনিট পরে আবার জাতীয় সঙ্গীত হওয়ার কথা ছিল। সেই পর্যন্ত সেখানেই বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে এসে সস্ত্রীক রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যান। তবে নমস্কার, প্রতি নমস্কার এবং ‘হ্যাপি ইনডিপেনডেন্স ডে’ ছাড়া আর কোনও বাক্যবিনিময় হয়নি দু’জনের।

রাজভবন থেকে বাইরে বেরিয়ে মমতা আবার মুখ খোলেন আরজি কর প্রসঙ্গে। রাজ্যপালের সমালোচনার বিস্তারিত জবাবও দেন। মমতা বলেন, ‘‘আমি তো নিজেই ওই ঘটনার নিন্দা করেছি। আমি তো কাল (শুক্রবার) ফাঁসির দাবিতে মিছিলও করব। পুলিশকেও আমি বলেছিলাম সে ভাবে এবং ওরা কাজ করেওছিল।’’ আরজি কর প্রসঙ্গে আদালতের রায়ে তাঁর কোনও আপত্তি নেই জানিয়েই মমতা বলেন, ‘‘আমি তো নিজেই বলেছিলাম সিবিআইকে দেওয়ার কথা। আমিই ওঁর (নিহত মহিলা চিকিৎসকের) বাবা-মাকে গিয়ে বলে এসেছিলাম রবিবারের মধ্যে আমার পুলিশ না পারলে সিবিআইকে দেব। রবিবারের মধ্যে হয়েও যেত। ওদের (পুলিশের) জিনিসগুলোই নিয়ে ওরা (সিবিআই) কাজ করছে। কাজটা ওরা (পুলিশ) অনেকটা গুটিয়েই দিয়েছিল। কিন্তু আদালত তার আগেই সিবিআই দিয়েছে। আমরা জানিয়েছি পূর্ণ সহযোগিতা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement