নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলাকে এত দুর্বল ভাবার কারণ নেই। বাংলা সবাইকে নিয়ে চলে। সব ধর্মের সব জানি। উর্দু, পঞ্জাবি, ধোকলা, ধোসাও জানি। ছট পুজোও জানি, বুদ্ধদেবও জানি, জৈনও জানি, খ্রিস্টানও জানি। আমাদের নতুন করে শিক্ষা দেওয়ার কোনও দরকার নেই। বাংলা শিক্ষার আলোকে আলোকিত। সংস্কৃতির আলোকে সুরভিত। সভ্যতার আলোকে বিকশিত। বাংলা মা-বোনেদের আবেগে গর্বিত। বাংলা ছাত্রছাত্রীদের আবেগে সমৃদ্ধ। তাই এই বাংলা বিশ্ববাংলা।
মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী, রূপশ্রী প্রকল্প হয়েছে। আমাদের সময় তো একটা হাসপাতালে ভর্তি করতেই পারতাম না। পাড়ার ডাক্তার একটা লালজল দিয়ে দিত। আজ তো সে অসুবিধা নেই। কত হাসপাতাল হয়েছে। এ ছাড়াও ন্যায্যমূল্যে ওষুধ পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকার দু’বার করে ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। মানুষের পকেট কাটছে টাকা নিচ্ছে। জীবনদায়ী ওষুধেরও দাম বাড়িয়েছে। আর আমাদের সরকার স্বাস্থ্যসাথী করেছে।
ভুল করলেও শাস্তি হয়। যে দোষ করে তাঁরও যেমন শাস্তি হয়। যে চক্রান্ত করে তাঁরও শাস্তি হয়। আবার কেই ভুল ভুয়ো ভিডিয়ো করে, ভুল তথ্য দেয়, আইন অনুযায়ী তাঁরও শাস্তি হতে পারে। এক বারও তো বলছেন না, মাধ্যমিক ১২ লক্ষ, উচ্চমাধ্যমিক ১০ লক্ষ পরীক্ষা দিয়েছে। একটি ঘটনা দেকাতে পারবেন? আগে তো ছেলেমেয়েদের আলাদা স্কুল ছিল। এখন ছেলেমেয়ে একসঙ্গেই পড়াশোনা করে। সবাই খারাপ এটা ঠিক নয়।
যদি কেউ বলে বাংলায় যেও না, গেলে খুন হয়ে যাবে, আমার খুব গায়ে লাগে। বাংলা অন্য রাজ্যের থেকে অনেক ভাল। উত্তরপ্রদেশে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ ধর্ষণ করে।
কোনও ঘটনা ঘটলে পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কোনও রং না দেখে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এটা উত্তরপ্রদেশ, বিহার নয়। এখানে রং দেখে বিচার হয় না। এখানে শাস্তি হয়।
আমরা যেটা বলি সেটা করি। অন্যেরা সেটা করে না। বরং কুৎসা করে। আমরা করি লক্ষ্মীর ভান্ডার, ওরা করে কুৎসার ভান্ডার!
আজ এক বছর বাদে গর্ব করে বলতে পারি প্রত্যেকটাই কার্যকর করেছি। এক কোটি ৫১ লক্ষ আগেই লক্ষ্মীর ভান্ডার পেয়েছে। বিজিবিএস-এ আরও ৫ লক্ষ দেওয়া হয়েছে। বাকি ছিল ২০ লক্ষ বাকি ছিলেন। তাঁদের অ্যাকাউন্টে আজ পৌঁছে গিয়েছে।
আজ ৫ মে। গত বছর এই দিনে আপনাদের আশীর্বাদে আমার শপথ নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল তৃতীয় বারের জন্য। আজকের দিন মা মাটি মানুষকে উৎসর্গ করতে চাই। সে জন্যই বেছে নিয়েছি আমাদের সমাজের মূল প্রাণ, আমার মা-বোনেরা, যাঁরা ঘরের লক্ষ্মী।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের টাকা বিতরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন জেলা থেকে মহিলারা এসেছিলেন। তাঁদের হাতে সেই টাকা তুলে দেন তিনি।
২০২১ সালের ২ মে রাজ্যে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার আগেই ভোটের প্রচারে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ঘোষণা করেছিলেন মমতা। তখন জানিয়েছিলেন, জিতে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের মহিলাদের প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেবে তাঁর সরকার। জেনারেল ক্যাটাগরি বা সাধারণ পরিবারের মেয়েরা মাসে ৫০০ টাকা করে বছরে মোট ৬ হাজার টাকা পাবেন। পিছিয়ে পড়া শ্রেণিভুক্তেরা পাবেন প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে বছরে ১২ হাজার টাকা।