মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
আদিবাসী দিবসের সভামঞ্চ থেকে মাওবাদী স্মৃতি উস্কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে অভিযোগের সুরে মানলেন, বেলপাহাড়ির মতো কয়েকটি অঞ্চলে ফের মাওবাদীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে আদিবাসী দিবসের রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “এই সাত বছরে আমরা কোনও গন্ডগোল হতে দিইনি। মাওবাদীদের ঢুকতে দিইনি। এখন বেলপাহাড়ির কয়েকটা অঞ্চলে কেউ কেউ ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদীদের নিয়ে আসছে। আবার চাইছে ঝাড়গ্রাম রক্তাক্ত হয়ে যাক। জঙ্গলমহলে রক্ত ঝরুক, গরিব মানষ বিপদে পড়ুক।” সরাসরি না বললেও এ ক্ষেত্রে মমতার অভিযোগের তির ছিল বিজেপির দিকেই। বিজেপি ভাগাভাগির রাজনীতি করছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা ভাগাভাগি করি না। দিল্লির শাসকদল বিজেপি ভাগাভাগি করে।’’
বস্তুত, রাজ্যে পালাবদলের পরে জঙ্গলমহলকে মাওবাদী মুক্ত করাই তাঁর সরকারের অন্যতম সাফল্য বলে বারবার দাবি করেছেন মমতা। সেই তিনিই এ দিন পরোক্ষে ফের মাওবাদী আনাগোনার কথা মেনে নেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। এ দিনের সভায় বারবার মাওবাদী প্রসঙ্গ ফিরে এসেছে মমতার কথা। জঙ্গলমহলের মানুষকে তিনি আর্জি জানিয়েছেন, “মাওবাদীদের সমর্থন করবেন না। মাওবাদীদের যারা সমর্থন করে তাদের দয়া করে এলাকায় ঢুকতে দেবেন না। আমি ঝাড়খণ্ডের ভাইবোনেদের ভালবাসি। তারা আমাদের ভাইবোন। কিন্ত যারা ঝাড়খণ্ডের উগ্রপন্থী তাদের আমি ভালবাসি না।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মাওবাদী-তৃণমূল আঁতাঁতেরই অভিযোগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘মাওবাদীরা ঢুকছে কি না, আমরা কী করে বলব? ওঁর সরকার, ওঁর পুলিশ কি ঘুমোচ্ছে? মাওবাদীদের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ তো প্রমাণিত। ২০১১ সালে ওদের সাহায্য নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলে ভোট পেয়েছিলেন। ওঁর দলেও মাওবাদীরা যোগ দিয়েছিল।’’ আর ভাগাভাগির রাজনীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে আদিবাসী, মাহাতোরাই এর উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। উনি জঙ্গলমহলে হেরে বসে আছেন। টাকা দিয়েও লোক জোগাড় করতে পারবেন না।’’