কাজল শেখ। ফাইল চিত্র।
বগটুইয়ের মন কী বলছে? সাম্প্রতিক নানা ঘটনার পরে এই নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ মহলে। বিশেষ করে বুধবারও কলকাতায় বিজেপির ধর্নায় দেখা যায় মিহিলাল শেখ ও ফটিক শেখকে। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর ধর্না মঞ্চ থেকে প্রশ্ন তোলেন, চাকরি, টাকা, ঘর দেওয়ার পরে বগটুইয়ের কী হল? দাবি করেন, বিজেপির সঙ্গে তাদের টাকা দিয়ে ‘ডিল’ হয়েছে। তাঁর এই কথায় ক্ষুব্ধ বগটুইয়ের অধিকাংশ স্বজনহারা।
টাকা নিয়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মিহিলাল শেখ বলেন, ‘‘আমরা ১০টা পরিবার আপনজনকে হারিয়েছি গত বছর ২১ মার্চ রাতের হামলায়। সেই শোক কখনও যাওয়ার নয়। এখনও আমাদের পরিবারের সেই সদস্যদের কথা মনে পড়লে ভিতরে ভিতরে গুমরে উঠি।’’ সেই হামলায় মা, স্ত্রী ও মেয়েকে হারানো মিহিলালের সংযোজন, ‘‘জীবনের মূল্য টাকা দিয়ে বিচার করা যায় কি?’’ হামলায় নিহত হয়েছিলেন ফটিক শেখের স্ত্রী। ফটিক বলছেন, ‘‘যারা আমাদের সব শেষ করেছে, তারা তৃণমূলের লোকজন। তৃণমূল এক বারও সে কথা স্বীকার করেছে কি? তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা কেউ এমন অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন?’’
রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরেও বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে স্বজনহারা একাংশের। যদিও আশিসের দাবি, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে বগটুই থেকে দু’হাজার ভোটে এগিয়েছিলাম। এখনও বগটুইয়ের মানুষ তৃণমূলে আছেন।’’ তবে আশিস যা-ই বলুন, স্বজনহারাদের গেরুয়া-যোগ যে চিন্তায় রেখেছে তৃণমূল নেত্রীকে তার প্রমাণ, বগটুইয়ের দায়িত্ব তিনি কাজল শেখের মতো নেতার হাতে তুলে দিয়েছেন। কাজল বলেন, ‘‘দিদি বগটুইয়ের স্বজনহারাদের জন্য পরিবার পিছু চাকরির ব্যবস্থা করে তাঁদের সারা জীবনের ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা করেছেন। সেই মানুষদের মধ্যে দু-এক জন বিজেপি করছেন। আমার ধারণা, সকলে বিজেপিতে যাননি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘যাঁরা বিজেপি করছেন, তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করব।’’
বগটুইয়ে ‘জমি ফেরাতে’ রামপুরহাট-১ ব্লকে সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি হিসাবে বগটুইয়ের তৃণমূল কর্মী রিয়াজ শেখের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। আশিস বলেন, ‘‘বগটুই-সহ ব্লকের সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে রিয়াজ কাজ করবেন।’’