ফাইল চিত্র।
এক বছর ঝুলে থাকার পর দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠন সাজতে সক্রিয় হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দল ও কর্মচারী নেতাদের উপস্থিতিতে ভোটের আগে সংগঠনকে সক্রিয় করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। রাজ্য ও জেলা স্তরে একেবারে নতুন করে কর্মচারী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় উপস্থিত থাকলেও বৈঠকে ছিলেন না কর্মচারী সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
মহার্ঘভাতা সহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ অনেক দিনের। এই অবস্থায় বারবার চেষ্টা করেও দলের কর্মচারী সংগঠন গুছিয়ে উঠতে পারেনি তৃণমূল। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের ফল কাটাছেঁড়ার সময় দেখা গিয়েছিল, পোস্টাল ব্যালটের (যার সিংহভাগ সরকারি কর্মচারী) একটা বড় অংশই শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। সেই সময় থেকেই কর্মচারী সংগঠনকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করা হলেও এক বছরে সে কাজ বিশেষ এগোয়নি। শুধু তাই নয়, এক বছরের মাথায় সাংগঠনিক অবস্থা পর্যোলোচনা করতে গিয়ে দলীয় নেতৃত্ব দেখেছেন রাজ্য বা জেলা স্তরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরির কাজই শেষ করতে পারেননি ভারপ্রাপ্ত নেতারা। তার পরই কর্মচারী নেতাদের ডেকে এই বৈঠকে বসেন দলের রাজ্য সভাপতি এবং মহাসচিব। সেই বৈঠকেই ফোন মারফৎ বক্তৃতা করে ভোটের মুখে সংগঠনের করণীয় ব্যাখ্যা করেন তৃণমূলনেত্রী।
ওই বৈঠকেই কর্মচারী সংগঠনের রাজ্য কমিটির মাথায় থাকা তিন আহ্বায়কের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী নেতাদের পদ থেকে অব্যাহতি দিতেই আহ্বায়ক করা হয়েছে বিদায়ী তিন জনের অন্যতম দিব্যেন্দু রায়কে। অন্য দুই নেতা সৌম্য বিশ্বাস ও তপন গড়াই অবসর নেওয়ায় তাঁদের পরামর্শদাতা হিসেবে রাখার কথা হয়েছে। আহ্বায়ক ছাড়া অবশ্য তৃণমূলের কর্মচারী সংগঠনের একটি কোর কমিটি ছিল। দলীয় সূত্রে খবর, দ্রুত জেলাগুলিতে পরবর্তী কমিটির সভাপতি নির্বাচনের কাজ সেরে ফেলতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট নেতাদের। তৃণমূলের এক শীর্ষনেতা বলেন, ‘‘দলের সব সংগঠনেই কিছু রদবদল হচ্ছে। নেত্রীর পরামর্শ মতো সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নানা স্তরেও কিছু রদবদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
ওই বৈঠকে গৃহীত রদবদলের সিদ্ধান্ত বা তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে অবশ্য শুভেন্দুর কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি। ফোনেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
এই সিদ্ধান্তের পরে সংগঠনের কাজকর্ম পরিচালনায় তৈরি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটিও’ মঙ্গলবার দুপুরে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। কর্মচারী সংগঠনের আহ্বায়ক দিব্যেন্দু রায় বলেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্তদের পরামর্শ নিয়েই সংগঠনের সব স্তরকে নতুন করে সাজানোর কথা ভাবা হয়েছে।’’