মুখ্য়মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কোভিড প্রতিষেধক নিয়ে মঙ্গলবারের বৈঠকে করোনা-কালে সমাবেশ করার প্রসঙ্গ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বুধবার বাঁকুড়া ১ ব্লকের সুনুকপাহাড়ি হাটতলার খোলা মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে তৃণমূলের বড় রাজনৈতিক জমায়েত হওয়ার কথা।
সূত্রের খবর, আলোচনার সুবাদে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বৃহত্তর জনস্বার্থে বর্তমানে রাজনৈতিক সমাবেশ কাঙ্ক্ষিত নয়, সে বিষয়ে তিনি সচেতন। তবু কেন তাঁকে এখন বাঁকুড়ায় সমাবেশ করতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী তার ব্যাখ্যা দেন। জানান, সমাবেশ করতে হচ্ছে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায়। কারণ, করোনা-কালে, বিজেপি এবং আর দু’একটি রাজনৈতিক দল এ রাজ্যে বড় সমাবেশ করেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাঁকুড়াতেই সমাবেশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, একটি রাজনৈতিক দল বড় সমাবেশ করলে, প্রতিপক্ষেরও বড় সমাবেশ না করে উপায় থাকে না। এটা রাজনীতির প্রশ্ন। তাই এই প্রথম তিনি করোনা-পরিস্থিতিতে বড় সমাবেশ করছেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী পরে জানিয়েছেন, খোলা মাঠে সভা হবে। সেখানে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলার চেষ্টা অবশ্যই করা হবে।
সভায় অন্তত এক লক্ষ ৩০ হাজার মানুষকে আনার লক্ষ্য নিয়েছে জেলা তৃণমূল, দাবি নেতাদের। ভিড় সে আকার নিলে স্বাস্থ্য তথা দূরত্ব-বিধি কতটা মানা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা পেশায় চিকিৎসক সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘রাজ্য সরকারই ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে. আর খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সভাতেই লক্ষাধিক লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে রাজ্যের শাসকদল!’’ তবে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরার প্রত্যয়, ‘‘আমরা স্বাস্থ্য-বিধি মেনেই সভা করব।’’
আরও পড়ুন: ঘরে ঘরে ঘুরে প্রকল্প প্রচার শিক্ষকদলের, প্রশ্নে মুখর বিরোধীরা
তৃণমূল সূত্রের দাবি, জেলার ৩২৫৯টি বুথের প্রতিটি থেকে ৫০ জনকে দলনেত্রীর সভায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রায় ১৭০০ বাসের ব্যবস্থা হয়েছে। কয়েক হাজার গাড়ি ও মোটরবাইকেও অনেকে আসবেন।
কী ভাবে মানা হবে স্বাস্থ্য-বিধি?
শ্যামলবাবু জানান, তৃণমূলের ব্লক ও অঞ্চল নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গাড়িতে ওঠার আগে ও সভাস্থলে নামার সময়ে প্রত্যেকের হাতে স্যানিটাইজ়ার স্প্রে করতে হবে। প্রত্যেকের মাস্ক থাকা বাধ্যতামূলক। না-থাকলে দল থেকে মাস্ক দেওয়া হবে। মন্ত্রীর দাবি, ‘‘সুনুকপাহাড়ির হাটতলার মাঠে কয়েকশো বিঘা খোলা জমি রয়েছে। ফলে, সেখানে জমায়েত হলেও দূরত্ব বজায় রাখা যাবে।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “সভায় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হলে ও পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা গেলে, কিছুটা হলেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা কম থাকবে।”
আরও পড়ুন: যোগদানের হিড়িকে ‘বল’ পাচ্ছে বিজেপি