মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
আমপান নিয়ে দুর্নীতি মোকাবিলার দায়িত্ব এবার নিজের কাঁধে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমার উপর ভরসা রাখুন, আস্থা রাখুন। কেউ বঞ্চিত হবেন না।’’
ক্ষতিপূরণ ঘিরে কেন এত অভিযোগ এদিন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে তিনি বলেন, ‘‘আমপান বিপর্যয়ের টাকাটা আমরা তাড়াতাড়ি পাঠিয়েছি বলে কোথাও কোথাও একটু একটু ভুলভ্রান্তি করেছিল। সেটা আমরা সংশোধন করে নিয়েছি।’’ এ ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্তদের কেউ বঞ্চিত হবে না, এ টুকু জেনে রেখে দেবেন। এইটুকু ভরসা-আস্থা আমার উপর রাখবেন। কারও কোনও সমস্যা থাকলে আমরা সেটা দেখে নেব, চিন্তার কিছু নেই।’’
ক্ষতিপূরণ বিলিতে এই অনিয়মের অভিযোগকে সামনে রেখে পথে নেমেছে বিরোধীরা। এই অভিযোগ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর ‘ব্যাখ্যা’ মানতে নারাজ বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘‘এইরকম প্রতারণা বা দুর্নীতির ব্যাপারে আই রয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে কোনওরকম আইনি পদক্ষেপ করেনি সরকার। দল থেকে বহিষ্কার করা লোকদোখানো কাজ। ভরসা রাখতে বলে আসলে মানুষের প্রতিবাদকে দূর্বল করতে চাইছেন।’’ এদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে ‘দিলীপদাকে বলো’ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেছে বিজেপি। সেখানে আবেদন এলে তা রাজ্য প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে তারা।
আরও পড়ুন: ‘পরের কিস্তি নেবেন? আগে টাকার ভাগ দিতে হবে’
সিপিএম ও কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ হাস্যকর যুক্তি। তাড়াহুড়োয় ভুল হয়েছে মেনে নিলেও ভুল করে সব টাকা কী ভাবে তৃণমূলের অ্যাকাউন্টে চলে যায়?’’ একই ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি করে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘‘শুধু মুখে আশ্বাস দিলে হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে ক্ষতিপূরণ পৌঁছে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।’’
বিরোধীদের কথা উল্লেখ না করে মমতা আরও বলেন, ‘‘এ নিয়ে রাজনীতি করার ব্যাপার নেই। আসুন, আমরা মানুষের সেবা করি।’’ আমপানেও যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি কাজ করেছে, এদিন তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।