স্বাস্থ্য পরিষেবায় চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কের উন্নতির উপরে জোর দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র
নীলরতন সরকার হাসপাতালে হাঙ্গামার পরে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য পরিষেবা অচল হয়ে পড়েছিল। এই বিষয়ে আরও একটু মমতার প্রয়োজন বলে মনে করছিল বিভিন্ন মহল। সেই মমতা দেখিয়েই চিকিৎসকদের ডেকে অচলাবস্থা কাটান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভাতেও স্বাস্থ্য পরিষেবায় মমতার উপরেই জোর দিলেন তিনি। জোর দিলেন চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কের উন্নতির উপরে।
শুক্রবার প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এনআরএসের ঘটনার উল্লেখ করে জানতে চান, হাসপাতালে চিকিৎসক-নিগ্রহ বন্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? সরকারি হাসপাতালে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা লিখিত ভাবে মান্নানকে জানানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতে মান্নান জানান, ডাক্তার-নিগ্রহের ঘটনা ঘটে বেসরকারি হাসপাতালেও। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা তখন জানান, স্বাস্থ্যসচিব রাজীব সিংহ এ বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে কথা বলেছেন। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে সরকার সাহায্য করবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, গুজরাত, রাজস্থানে বিজেপি, দিল্লিতে আপ এই ধরনের গোলমালে ‘এসেনশিয়াল সার্ভিসেস মেনটেন্যান্স অ্যাক্ট’ বা এসমা জারি করলেও পশ্চিমবঙ্গ সে-পথে হাঁটেনি। মমতার কথায়, ‘‘যে-সব রোগী দূর থেকে আসেন, তাঁদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা উচিত। ভালবাসার চেয়ে বেশি কিছু হতে পারে না। কাউন্সেলিং করা দরকার। সেই চেষ্টা চলছে।’’ তবে চিকিৎসকদের গায়ে হাত দেওয়া যে উচিত নয়, তা স্পষ্ট করে দেন মমতা।
স্বাস্থ্য ভবনের খবর, কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে যে-যৌথ পরিদর্শন চলছে, সেখানেও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্পর্কের উন্নয়নে প্রশিক্ষণের কথা উঠেছে একাধিক বার। চাপ কমাতে এ দিনই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে তাইকোন্ডো প্রশিক্ষণের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিপদের মাত্রা বোঝাতে কথা হয়েছে রঙের ব্যবহার নিয়েও। যেমন বিপদ, সেই ধরনের রং অ্যালার্মের ডিসপ্লে পর্দায় ফুটে উঠবে। হাসপাতালের এক কর্তা জানান, আগুন লাগলে এক রকম রং। আবার গন্ডগোল হলে রক্ষীদের সক্রিয় করতে অন্য রকম রং-সঙ্কেত দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সভায় জানান, হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য হটলাইন, অ্যালার্মের ব্যবস্থা হয়েছে। রোগীর আত্মীয়দের ওয়ার্ডে ঢুকতে হলে নির্দিষ্ট রঙের কার্ড দেখাতে হবে। হাসপাতালগুলির প্রয়োজনের ভিত্তিতে পেশাদার রক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি-সহ মোট ১৭টি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
মুর্শিদাবাদে আরও একটি মানসিক হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলে এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী।