Mamata Banerjee

প্রধানমন্ত্রীর ডাকা জি২০ বৈঠকে ‘শ্রোতা’ মমতা

একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল বৈঠকে বক্তব্য পেশ করেছেন। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও জি২০ সম্মেলনের একাধিক বৈঠক হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:৪১
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

জি২০ সম্মেলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা বৈঠকে বলার সুযোগ পেলেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে প্রায় দু’ঘণ্টার এই ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতার ভূমিকা ছিল কার্যত শ্রোতার।

Advertisement

একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপাল বৈঠকে বক্তব্য পেশ করেছেন। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও জি২০ সম্মেলনের একাধিক বৈঠক হওয়ার কথা। জানুয়ারির সেই সূচি নির্ধারিত রয়েছে। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গকে বলার সুযোগ না দিয়ে ‘অচ্ছুত’ করে রাখার উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা নিয়ে আলোচনা গভীর হয়েছে রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক মহলে। এ রাজ্যে যে সব বৈঠক হবে বলে আগে বলা হয়েছিল, এ দিনের বৈঠকে সেগুলিতে কিছুটা বদল আসারও ইঙ্গিত মিলেছে।

যদিও প্রাক্তন বিদেশসচিব এবং জি২০ বৈঠকে রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের সমন্বয়কারী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া গিয়েছে। কলকাতাতে এবং উত্তরবঙ্গে (দার্জিলিং) জি২০ সম্মেলনের একাধিক অনুষ্ঠান হবে। তা ছাড়া, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এর আগে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নিজের বক্তব্য রেখেছিলেন মমতা। তবে সে ক্ষেত্রেও যুক্তি, ওই বৈঠকে দলের প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। এ দিন তিনি বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে।

Advertisement

সূত্রের দাবি, এ দিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা ছিল, জি২০-র সভাপতিত্ব গোটা দেশের বিষয় এবং এতে দেশের শক্তি তুলে ধরার সুযোগ পাওয়া গিয়েছে। সম্মেলনের আয়োজন এমন ভাবে করতে হবে, যাতে দেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা যায়। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সম্মেলনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার অনুরোধ করতে চেয়েছেন মোদী।

এ দিনের বৈঠক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তো দূরের কথা, রাজ্য প্রশাসনের কেউ মুখ খোলেননি। একটি সূত্রের দাবি, এ দিন সব মিলিয়ে ১২ জন নিজেদের বক্তব্য পেশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গুজরাতের রাজ্যপাল, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত প্রমুখ। আধিকারিকদের অনেকে জানাচ্ছেন, আর এক বার এই বৈঠক করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর শ্রোতার ভূমিকায় থাকা নিয়ে আধিকারিকদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সাম্প্রতিক অতীতেও জাতীয় স্তরের বিভিন্ন বৈঠকে মমতাকে নীরব থাকতে হয়েছিল। বলার অবকাশ মেলেনি। এমনকি, স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদ্‌যাপনের প্রস্তুতির প্রথম বৈঠকেও তিনি বলেননি।

জি২০ প্রস্তুতি নিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের একটি দল রাজ্যে ঘুরেও গিয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগের পরিকল্পনায় বিভিন্ন দেশের মহিলা এবং এনজিও প্রতিনিধিদের বৈঠক এ রাজ্যে হওয়ার কথা থাকলেও তা বদলাতে পারে। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকের পরে নবান্নের অনেকের ধারণা, ওয়ার্কিং গ্রুপের দু’-তিনটি বৈঠক হবে রাজ্যে। যদিও অসমকে পাঁচটি, কর্নাটককে ১৪টি বৈঠকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যে জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির অর্থসচিব পর্যায়ের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে জানুয়ারির ৯, ১০ এবং ১১ তারিখ কলকাতায় আর্থিক বিষয়ক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বিজ্ঞানী, অন্যান্য গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ফেব্রুয়ারির ৮ এবং ৯ তারিখ হবে আরও একটি বৈঠক। ৩, ৪ এবং ৫ এপ্রিল শিলিগুড়িতে হওয়ার কথা পর্যটন সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement