গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নাম করেননি। কিন্তু রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে কড়া কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মমতার তির্যক উক্তি, ‘‘কারও চোখে ন্যাবা হলে কী করব? বাচ্চা ছেলে হলে তা-ও বকে চুপ করানো যায়!’’
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার যখন মমতা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে ওই কথা বলছেন, রাজ্যপাল ধনখড় তখন দিল্লিতে। বৃহস্পতিবারই সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। তার আগে সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট বৈঠকও করেন ধনখড়।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পরেই রাজ্যপালের এই দিল্লি সফর নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। সম্প্রতি ‘ভোট-পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে একের পর এক টুইট করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় চিঠিও লিখেছেন তিনি। পরোক্ষে বলেছেন, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। এর পরেই রাজ্যপালের দিল্লি সফর নিয়ে তাই স্বভাবতই কৌতূহল রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের একের এক টুইট প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা সরাসরিই বলেন, “বাচ্চা ছেলে হলে তা-ও বকে চুপ করানো যায়! কেউ কেউ রাজ্যে হিংসা পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আদৌ কি কোনও হিংসার পরিবেশ তৈরি হয়েছে? যাঁরা হিংসা দেখছেন, তাঁদের চোখে ন্যাবা হয়েছে।’’
দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ধনখড় বলেছিলেন, ‘ভোটের পরে বহু মানুষ হিংসার কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন। বিরোধীদের প্রচুর সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা অব্যাহত। চলছে নারী নির্যাতনও। রাজ্যের এই পরিস্থিতি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও আপনি নীরব থেকেছেন। এমনকি, মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি।’ এই চিঠি প্রকাশ্যে কেন আনলেন রাজ্যপাল, তা নিয়ে পাল্টা কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় নবান্ন। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে টুইটে রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনাও করা হয়।