—ফাইল চিত্র।
বেশ কিছুদিন ধরে সব্যসাচী দত্তের কথাবার্তা ও কার্যকলাপ নিয়ে অসন্তুষ্ট তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শুক্রবার তা মাত্রা ছাড়াল। তাঁর বিরুদ্ধে এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও দলের মধ্যে গুঞ্জন দানা বেঁধেছে। যদিও দলের এক প্রথম সারির নেতা বলেন, ‘‘এমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে দলীয় শৃঙ্খলার সঙ্গে কোনও আপস কোনও ক্ষেত্রেই করা হবে না।’’
এ দিন বিদ্যুৎ ভবনে সব্যসাচীর নেতৃত্বে একটি শ্রমিক সংগঠনের বিক্ষোভ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত গড়ায়। গেটে ভাঙচুরও হয়। সেখানেই বক্তৃতা করে বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন রাজ্য সরকারের দিকেই। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তাঁদের আর্থিক দাবি মানা না হলে কী করে তা ‘মানাতে হয়’, তাও বুঝিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন তিনি।
তৃণমূল ভবনে দলীয় বৈঠকের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ওই বিক্ষোভের খবর পৌঁছয়। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় নিজে সেখানে গিয়ে মমতাকে বিশদ রিপোর্ট দেন। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষণাৎ সব্যসাচীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে স্থির করেন। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে কথা হয়। তার পরেই সব্যসাচীকে দল থেকে সাসপেন্ড করা, মেয়র পদ থেকে সরানো ইত্যাদি সম্ভাবনার কথা দলীয় মহলে ঘুরতে থাকে। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত দল তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে সব্যসাচী যে দলের ‘আস্থা’ হারাচ্ছেন, এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎকর্মীদের বেতনবৃদ্ধি সংক্রান্ত যে দাবি সব্যসাচীরা জানাচ্ছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে দলের এক নেতার বক্তব্য, বিদ্যুৎ নিগমের কর্মীদের ক্ষেত্রে আলাদা বেতনক্রম আছে। মহার্ঘভাতাও আলাদা। অন্য সরকারি দফতরের তুলনায় তা বেশি ছাড়া কম নয়। তাঁদের জন্য সরকারকে হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি গুনতে হয়। পাশাপাশি নবান্ন মনে করে, আর্থিক দাবির ‘চাপ’ মেনে নেওয়ার কোনও সঙ্গত কারণ নেই।
সব্যসাচী অবশ্য পরে বলেন, ‘‘সরকারের যা বলার, সেটা যদি কর্মী সংগঠনকে ডেকে বুঝিয়ে বলা হয়, তা হলে বিষয়টি পরিষ্কার হতে পারে। তার পর যা করার, বোঝা যাবে। সেটুকও তো করা হচ্ছে না!’’