মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে দ্বিতীয় বার সর্বদল বৈঠক ডাকল রাজ্য সরকার। বিধানসভায় প্রতিনিধিত্ব আছে, এমন সব দলকে নবান্নে কাল, বুধবার ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে সোমবার ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। বৈঠকে থাকার কথা বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। পরে রাজ্যের মুখ্যসচিবের তরফে বৈঠকে আমন্ত্রণের চিঠি পাঠানো হয়েছে সব দলকে।
করোনা, লকডাউন, ‘আমপান’-সহ সাম্প্রতিক সব বিষয়েই এই সর্বদল বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। এর আগে ২৩ মার্চ রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার দিনই প্রথম সর্বদল বৈঠক হয়েছিল নবান্নে। এ বারের বৈঠকের সূচি চূড়ান্ত করার আগে মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমানবাবুর সঙ্গে। কিন্তু বিধানসভায় আলোচনা করার পরিস্থিতি যে নেই, স্পিকার তা ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। নবান্নে সব পরিষদীয় নেতৃত্ব থাকলে স্পিকারেরও সেখানে যেতে অসুবিধা নেই বলে বিমানবাবু জানান। স্পিকার বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রাজ্যের প্রয়োজনে এমন শীর্ষ স্তরের বৈঠকে আমি থাকব।’’
বিরোধী দলনেতা মান্নান ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী আর যাঁদের ফোন করেছিলেন, সেই দিলীপবাবু বা বিমানবাবু অবশ্য পরিষদীয় নেতা নন। ফলে, বৈঠক পরিষদীয় না রাজনৈতিক নেতৃত্বের, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে বিরোধী শিবিরে। দিলীপবাবু জানিয়েছেন, তিনি নিজেই বৈঠকে যাবেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর পাশাপাশি বিমানবাবু বা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও বৈঠকে যেতে পারেন। তবে মান্নান এ দিনই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছেন, পূর্বনির্ধারিত কিছু কর্মসূচি থাকায় তিনি কাল বৈঠকে যেতে পারবেন না। কংগ্রেস সে ক্ষেত্রে কাদের বৈঠকে পাঠাবে, এ দিন রাত পর্যন্ত ঠিক হয়নি।
আরও পড়ুন: গরিব কল্যাণে বাংলা বাদ! অভিষেকের তোপে মোদী, অধীরের নিশানায় দিদিও
নবান্নে এ দিন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চলতি পরিস্থিতিতে বিধানসভার অধিবেশন ডাকা সম্ভব নয়। তাই ব্যতিক্রমী এই পরিস্থিতিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রের ধারণা, কোভিড, আমপান-সহ একাধিক বিষয়ে কথা হতে পারে ওই বৈঠকে।
দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘করোনা ও ‘আমপান’-এর ত্রাণে দুর্নীতি প্রসঙ্গে যা অভিযোগ আসছে, জনগণের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব এবং নির্দিষ্ট পরামর্শ দেব। প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যে ৬ বার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, বিরোধীদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। বাংলায় কেন নয়? দেরিতে হলেও মুখ্যমন্ত্রী বুঝেছেন, ভাল কথা! আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করতে রাজি।’’ সুজনবাবুর মত, ‘‘সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই আমরা বৈঠকে যাব। আগের বারের বৈঠকের সব আলোচনা যে কার্যকর হয়েছে, এমন নয়। বৈঠকে গিয়েই যা বলার আছে, সে সব জানাতে চাইব।’’