মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃতীয়বার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বড় সাংগঠনিক বৈঠকের ডাক দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী ৫ জুন তৃণমূল ভবনে সাংগঠনিক বৈঠক ডেকেছেন তিনি। এই বৈঠকে হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের লোকসভার সাংসদ, রাজ্যসভার সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী ও পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পুর প্রশাসকদের। শুক্রবার একযোগে বার্তা পাঠানো হয়েছে সবাইকে। ঠিক কী কারণে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে, তা অবশ্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়নি। দলের নির্দেশ পাওয়া তেমন এক বর্ষীয়ান বিধায়ক বলেছেন, ‘‘৫ তারিখ দুপুরে আমাদের সবাইকে তৃণমূল ভবনে ডেকেছেন দলনেত্রী। আপাতত এ টুকুই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সবাই নেত্রীর নেতৃত্বে বৈঠকে যোগ দেব।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়াও এই বৈঠকের থাকতে পারেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও যুব সংগঠনের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোট যুদ্ধ জয়ের পর রাজ্য সরকারকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের। তার মধ্যে ইয়াস ঘুর্ণিঝড়েও রাজ্যের অনেক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২ মে বিধানসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর ৩ মে দলের নবনির্বাচিত বিধায়কদের তৃণমূল ভবনে বৈঠকের জন্য তলব করেছিলেন মমতা। সেই বৈঠকেই নতুন বিধায়কদের মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, আপাতত বিজয় উৎসব বাদ দিয়ে কোভিড সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। সেই নির্দেশ মতো কাজও শুরু হয়েছে। মন্ত্রিসভার সদস্যরাও শপথ নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু তার মধ্যেই কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র-সহ রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিমকে নারদ মামলায় গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শুক্রবার তাঁরা জামিন পেলেও বিষয়টি আর ‘লঘু’ করে দেখতে নারাজ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই মনে করা হচ্ছে, আগামী দিনে রাজনৈতিক লড়াইয়ের পথ নির্ধারণের জন্য দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সাংগঠনিক বৈঠকে তলব করে থাকতে পারেন দলনেত্রী।
তবে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের কথায়, রাজ্যের প্রায় ১১০টি পুরসভার ভোট বাকি রয়েছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত এক বছর ধরে ভোট করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচন কমিশনার। কিন্তু চলতি বছর সংক্রমণের গতি নিম্নগামী হলেই পুর নির্বাচনের পক্ষপাতী তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই ৫ জুনের বৈঠকে সেই নির্বাচন প্রসঙ্গেও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন দলনেত্রী। কারণ, বিধানসভা ভোটের কারণে প্রায় তিন মাস পুরসভাগুলি প্রশাসকহীন হয়ে পড়েছিল। ফলে প্রভাব পড়ছে পুর পরিষেবাতেও। এ বার পরিস্থিতি বুঝে সেই সব পুরসভায় যাতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মারফৎ পরিষেবা দেওয়া যায়, সে ব্যাপারেই সচেষ্ট হতে পারে শাসকদল।