মেয়ো রোডে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
২০১৭ সাল থেকে রাজ্যে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ। মাঝে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে ভোট হলেও তা প্রতি বছর হয়নি। সোমবার মেয়ো রোড থেকে মমতা সেই নির্বাচনের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা যদি শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচনটা করতে পারেন, আমি জেলায় জেলায় নির্দেশ দিয়ে দেব।’’
‘কালীঘাটের কাকু’র সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের দফতরে তল্লাশি চালাতে গিয়ে ইডির আধিকারিকেরা কম্পিউটারে যে ১৬টি ফাইল ডাউনলোড করেছিলেন, তা নিয়ে মমতা পরোক্ষে বিজেপিকেই দুষেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এরকম প্রতিশোধপন্থী সরকার কখনও দেখিনি। নির্বাচনের আগে অভিষেককে গ্রেফতার করার হুমকি দিচ্ছে। ওর কম্পিউটারে যা ছিল, নিয়ে নিয়েছে। কাউকে না জানিয়ে ফাইল ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরাও কম্পিউটারে ওস্তাদ। তথ্য বার করে নিয়েছি আমরা। বুঝে গেছি ওই কম্পিউটারে তোমরাই ফাইল ঢুকিয়েছ।’’
ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছে মমতা বলেন, ‘‘ইসরো যা করেছে, তাদের অভিনন্দন জানাই। ওখানে বাংলার ২৮ জন আছেন। বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদ তাঁরা। আমি তাঁদের ব্যক্তিগত ভাবে চিঠি দিয়েছি। ওঁদের সময় হলে এখানে রাজপথে ওঁদের সংবর্ধনা দিতে চাই।’’
হাওড়ায় আরও দু’লক্ষ, বানতলায় পাঁচ লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। দেউচা পাঁচামিতে আরও এক লক্ষ মানুষ চাকরি পাবেন। চাকরির অভাব নেই। শিক্ষক পদে ২৪ হাজার শূন্যপদ আছে। কিন্তু নিয়োগ করতে পারছি না। কেউ না কেউ আদালতে মামলা করে দিচ্ছে। তাতে আটকে যাচ্ছে।’’ চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘আপনারাই বলে দিন না কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে? দরকার হলে বিচারকের অধীনে পরীক্ষা হোক, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু চাকরি তো হবে।’’
চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ দেখতেই পাননি, জানালেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘টিভির সামনে বসে ছিলাম। ল্যান্ডিংটা তো দেখতেই পেলাম না। সফ্ট ল্যান্ডিং হল না রাফ, বোঝা গেল না। অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে অন্য এক জনের ছবি ভেসে উঠল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর আগেও মহাকাশ অভিযান হয়েছে। ইন্দিরা গান্ধীর সময়েও হয়েছিল। এটা নতুন কিছু নয়। আমাদের ছেলেমেয়েরা দক্ষ। আমেরিকা, ব্রিটেন সব জায়গায় তারা কাজ করছে।’’
পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গে মমতা জানান, বাংলায় সব সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও কেউ বাইরে কাজ করলে গেলে তাঁর সরকারের কিছু করার নেই। তিনি বলেন, ‘‘এখানে সব করে দিয়েছি। ব্যবসার টাকাও দেব বলেছি। তা-ও কেউ বাইরে গেলে আমি কী করতে পারি? বাংলা তো শিক্ষায় এক নম্বর। তা-ও বাইরে পড়তে যান অনেকে। যেতেই পারেন।’’
বাজি কারখানার বিস্ফোরণের কথা বলতে গিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তো মানুষ মরছেন। রেল দুর্ঘটনায় ৩০০ জন মারা গেলেন। মিজোরাম, মণিপুর, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে মানুষ মারা যাচ্ছেন। সেখানে তো কোনও দল পাঠানো হচ্ছে না।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির লোককে উপাচার্য করা হয়েছে। রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে তিনি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘এটা মগের মুলুক নাকি? বিজেপি সেলের প্রেসিডেন্টকে উপাচার্য করে দিল। আপনি মনোনীত, আমরা কিন্তু নির্বাচিত।’’