Mamata Banerjee in Jalpaiguri

সার ও কীটনাশক বিধিতে বিপন্ন ১০ লক্ষ চা-শ্রমিক! সমস্যা শুনলেন মুখ্যমন্ত্রী

প্রয়োজনে বিজ্ঞানীদের পরামর্শও নেওয়া হবে, জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দেওয়ার পরে সমস্যায় পড়েছেন চা-শ্রমিকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:০৩
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি ফেসবুক।

দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স এলাকায় বড় বড় চা-বাগানের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু ছোট-মাঝারি মাপের চা-বাগানও। সেগুলি কোনওটা পাঁচ বিঘার উপর তৈরি, কোনওটা ১০ বিঘা। সব মিলিয়ে এই সব চা-বাগানে কাজ করেন প্রায় ১০ লক্ষ শ্রমিক। কেন্দ্রীয় সরকারের এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, চা-বাগানে রাসায়নিক ব্যবহার করা হলে, সেই বাগান থেকে আর চা কেনা হবে না। তার পরই বিপদে পড়েন এই ১০ লক্ষ শ্রমিক। বুধবার এই চা-শ্রমিকদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও অবস্থাতেই যাতে এই সব শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে না পড়েন, তা দেখার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন তিনি।

Advertisement

বুধবার জলপাইগুড়ি জেলার চালসায় জনসংযোগ করেন মমতা। মেটেলির আইভিল চা-বাগানে যান তিনি। সেখানকার চা-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে তিনি বৈঠকের কথা জানান। চা-নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি সকলকে অনুরোধ করেছি, যাতে কেউ কাজ বন্ধ না করেন। কেন সমস্যা হচ্ছে সেটা নির্বাচনের পর খতিয়ে দেখব।’’

শুধু তা-ই নয়, প্রয়োজনে বিজ্ঞানীদের পরামর্শও নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশ দেওয়ার পরে সমস্যায় পড়েছেন চা-শ্রমিকেরা। তাঁরা তাঁদের বাগানের ফসল পোকার কবল থেকে বাঁচাতে কীটনাশক ব্যবহার করেন। সেই কারণেই তাঁদের থেকে চা-পাতা কেনা হচ্ছে না। সেই সমস্যা যাতে মিটে যায় তার জন্য উত্তরবঙ্গের সব প্রশাসনিক কর্তার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

পাশাপাশি যাঁরা চা-পাতা কেনেন, তাঁদের কাছেও মুখ্যমন্ত্রী আবেদন করেন, গোটা বিষয়টি ‘মানবিক’ দিক থেকে দেখার জন্য। মমতা বলেন, ‘‘সব কিছু সংশোধন করার একটা সুযোগ যেন দেওয়া হয়। নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট সব দফতরের সঙ্গে প্রশাসন বৈঠক করবে। তার পর সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে কী করা যায়, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এখন যাতে কারও কাজ বন্ধ না হয়, তা দেখার জন্য সকলকে অনুরোধ করছি।’’

দিন দুয়েক আগেই ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি। খবর পাওয়া মাত্রই রাতে কলকাতা থেকে সেখানে চলে যান মমতা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন, কথা বলেন ঝড়ে বিধ্বস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে। বুধবার জলপাইগুড়ির চালসা এলাকায় জনসংযোগে বার হয়েছিলেন মমতা। দুপুর নাগাদ জলপাইগুড়ি জেলার চালসা হোটেল থেকে বেরিয়ে মেটেলির আইভিল চা-বাগানে যান মুখ্যমন্ত্রী।

চা-বাগানে প্রবেশ করার মুখে গাড়ি থেকে রাস্তায় নেমে চা-বাগানের স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের পড়াশোনা নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। কী ভাবে স্কুলে যাতায়াত করে, সে সবটাই খোঁজ নেন মমতা। শুধু তা-ই নয়, এলাকার মানুষের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। শোনেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ। সেই ফাঁকেই দুপুরবেলা একটি চায়ের দোকানে সদলবলে ঢুকে পড়েন তিনি। সকলের জন্য চা বানাতে বলেন দোকানদারকে। তার পর নিজেই চা বানানোর কাজে হাত লাগান। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। সেই সঙ্গে রাস্তা, পানীয় জল সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা গ্রামবাসীরা মমতাকে জানান। মমতা জানান, এখন নির্বাচনী আচরণবিধি রয়েছে। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে বলেও গ্রামবাসীদের বলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement