শিশির অধিকারী এবং জ্যোতির্ময় কর
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে অধিকারী বিরোধী বলে পরিচিত জ্যোতির্ময় করকে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ কথা জানানো হয়েছে। ১৩ জনের নতুন ওই কমিটিতে চেয়ারম্যান করা হয়েছে পটাশপুরের প্রাক্তন বিধায়ককে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে বরাবরই অধিকারী পরিবারের বিরোধী বলে পরিচিত জ্যোতির্ময়। তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একাধিক বিষয়ে সংঘাত হয়েছিল তাঁর। যেই কারণে তৎকালীন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ শিশির অধিকারীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কখনওই মধুর ছিল না। ঘটনাচক্রে ২০১১ সাল থেকে কাঁথি শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন শিশির। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁকে এই পদ দেওয়া হয়েছিল।
তবে, গত বছর ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের পর এই উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁর সাংসদ বাবাকে। ইতিমধ্যে শিশিরের ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু দাদার হাত ধরে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছেন। তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলে থাকলেও দল থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। তাঁর বিরুদ্ধে আবার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নেতৃত্বকে সুপারিশ করেছে জেলা তৃণমূলের কমিটি। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে পটাশপুর আসন থেকে সরিয়ে অধিকারীদের দুর্গ দক্ষিণ কাঁথিতে জ্যোতির্ময়কে প্রার্থী করেছিলেন মমতা। কঠিন লড়াই দিয়েও বিজেপি প্রার্থীর কাছে হার মানতে হয়েছে তাঁকে। তাই অধিকারীদের বিরুদ্ধেই তাঁকে লড়াই করার লক্ষ্যে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে বসানো হল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও, গত ডিসেম্বর মাসে শিশিরকে এই পদ থেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে। বর্তমানে তিনি রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছে অধিকারী বিরোধী এই তৃণমূল নেতাকে।
উন্নয়ন পর্ষদের দায়িত্ব পাওয়ার পর আনন্দবাজার ডিজিটালকে জ্যোতির্ময় বলেন, "দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তখন আমি সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি। এবারও দল দায়িত্ব দিয়েছে তাই চেষ্টা করব সেই আস্থার মর্যাদা দেওয়ার।"