ফাইল চিত্র।
পানাগড় শিল্পতালুকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফুড প্যাকেজিং শিল্প গড়তে চাইছে একটি বেসরকারি সংস্থা। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটাই জানিয়েছেন। যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, বিনিয়োগের এমন প্রতিশ্রুতি আগেও মিলেছে। আগে তা বাস্তবায়িত হোক।
বাম আমলে কাঁকসা ও আউশগ্রামের মোট চারটি মৌজায় প্রায় ১,৪৫৮ একর জমি নিয়ে তৈরি হয় পানাগড় শিল্পতালুক। ২০০৯ থেকে সেখানে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। একটি বেসরকারি সার কারখানার নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেলেও কাঁচামাল হিসেবে গ্যাসের পর্যাপ্ত জোগান না থাকায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়নি। একটি সিমেন্ট কারখানায় অবশ্য উৎপাদন চলছে জোরকদমে। এ ছাড়া, একটি স্পিরিট কারখানায় উৎপদান শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার গ্যাসের ডিপো চালু হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার পেট্রল পাম্প চালু হয়েছে। আরও একটি পাম্প নির্মাণের কাজ চলছে। পাশাপাশি, আরও দু’-তিনটি কারখানার নির্মাণ কাজ চলছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে শিল্পের অভাবে শিল্পতালুকের বহু জায়গা এখনও ফাঁকা পড়ে, জানান এলাকাবাসী।
এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পানাগড় শিল্পতালুকে ওই শিল্পের জন্য বেসরকারি সংস্থাটি ৩৮ একর জমি নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা জমিটা দিচ্ছি। সেখানে ফুড প্যাকেজিং শিল্প কারখানা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁরা জানান, শিল্পের আশায় জমি দিয়েছেন তাঁরা। শিল্প এলেই তাঁরা খুশি হবেন। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ধীরে ধীরে শিল্পতালুকে একের পরে এক শিল্প গড়ে উঠতে শুরু করেছে। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এলাকার উন্নতি হবে।’’
তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতির উপরে অবশ্য ভরসা নেই বিরোধীদের। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, ‘‘২০১২-য় সার কারখানায় উৎপাদন শুরুর কথা ছিল। আজও হয়নি। শিল্পের নামে শিল্পতালুকে পেট্রল পাম্প তৈরি করা হচ্ছে। তিন মাস পরে ভোট। সে দিকে তাকিয়েই হয়তো এমন প্রতিশ্রুতি!’’ বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘বামেদের ৩৪ বছরের পরে, তৃণমূলের ১০ বছর গেল। রাজ্যে শিল্প বলতে কিছুই হয়নি। সামনেই ভোট। এখন আর শিল্প গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাভ নেই।’’ ‘বেঙ্গল সাবার্বান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে, এলাকার শিল্প-মানচিত্রের জন্য তা ইতিবাচক।’’