Mamata Banerjee

তথ্যপ্রযুক্তিতে লগ্নি ৩ হাজার কোটি, ‘সিলিকন ভ্যালি’ প্রকল্প গড়ছে রাজ্য

দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইনফোসিস রাজ্যের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি পিটিআই।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানতে ‘সিলিকন ভ্যালি’ প্রকল্প গড়ছে রাজ্য। প্রথম পর্যায়ের জমি বরাদ্দ সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে জমি চেয়ে নতুন ২০টি সংস্থার আবেদন সম্প্রতি মঞ্জুর করেছে রাজ্য মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার ইনফোকমের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, সেই সব সংস্থার হাত ধরে লগ্নি আসছে তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি। শুধু সেগুলিতেই প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে ন’হাজার। পাশাপাশি, বর্তমানে চালু তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির সম্প্রসারণ প্রকল্পেও আরও কর্মসংস্থান হবে।

Advertisement

দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইনফোসিস রাজ্যের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। শীঘ্রই প্রকল্পের নির্মাণ পরিকল্পনা জমা দেবে। পরের বছর কাজ শুরু হবে। উইপ্রো-কেও একই শর্তে জমি দেওয়া হবে। এ দিন এবিপি সংস্থা আয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের রাজসূয় যজ্ঞ ইনফোকমের মঞ্চে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রকে রাজ্যে লগ্নির আহ্বান জানান তিনি। করোনা সংক্রমণে এ বছর বিধ্বস্ত গোটা বিশ্ব। সেই ধাক্কা সামলে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলার পন্থাই এখন মূল চর্চার বিষয়। সেই পথ চলার দিশা খুঁজতেই ইনফোকমের মূল প্রতিপাদ্য, ‘দি নেক্সট নর্ম্যাল’।

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, করোনা যেমন সঙ্কট তৈরি করেছে, তেমনই নতুন সুযোগও। জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি ধাক্কা খাওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর বক্তব্য, টিকার জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি পরের ধাপের জন্যও প্রস্তুত হতে হবে। স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি রাখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ক্ষতির পরেও কী ভাবে বাঁচতে হবে, তার পরিকল্পনা জরুরি। সেই জন্য সঠিক অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। মেরুকরণ নয়, সকলকে নিয়ে উন্নয়নের পথে চলার পরিবেশ গড়তে হবে।’’

Advertisement

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে আশার আলো

• বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি-তে ২০টি নতুন সংস্থা তিন হাজার কোটি টাকারও বেশি লগ্নি করছে। প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে ন’হাজার।

• এর মধ্যে এয়ারটেলের ডেটা সেন্টারে লগ্নি ৩৫০ কোটি।

• উইপ্রোর সম্প্রসারণ প্রকল্পে লগ্নি ৫০০ কোটি টাকা। নতুন চাকরি ১০ হাজার।

• টিসিএসের কর্মী ৪৪ হাজার থেকে বেড়ে ৬১ হাজার হবে। বেঙ্গালুরুর থেকেও বড় হবে এ রাজ্যের কেন্দ্র।

• আইটিসি ইনফোটেকের প্রকল্পে তিন হাজার কর্মসংস্থান। নতুন চাকরি হবে কগনিজ়্যান্টেও।

করোনা-উত্তর সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োজন আরও বাড়বে, মত সংশ্লিষ্ট মহলের। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ই-গভর্ন্যান্সে পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে এগিয়ে। দেশের প্রথম সারির সব তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থারই ঘর পশ্চিমবঙ্গ। গত আট বছরে দেড় হাজার সংস্থায় ২.১০ লক্ষ কর্মী যুক্ত। সংস্থার বৃদ্ধির হার ১৩৩%। এই ব্যবসায় রফতানি বৃদ্ধির হার ১৭৫%।

আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের জন্য জানুয়ারিতে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা মমতার

সেই ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে নতুন লগ্নিকে আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, সর্বত্র নেতিবাচক পরিবেশের মধ্যে রাজ্যের ছবি অনেক ইতিবাচক। মেধাসম্পদের পাশাপাশি রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা, বিভিন্ন খাতে সরকারি ব্যয় বরাদ্দের বিপুল বৃদ্ধি, বিনিয়োগের প্রতি রাজ্যের দায়বদ্ধতা, পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্যভান্ডার ইত্যাদি মাপকাঠির কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এমন একটা রাজ্যের কথা বলছি, যা শুধু দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক দুনিয়াতেও সুবিদিত। বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনে বহু দেশ অংশীদার হয়। এখানে লগ্নি করতে আগ্রহী হয়।’’

আরও পড়ুন: শুভেন্দু অধ্যায় ‘ক্লোজড’, দলের অন্দরে স্পষ্ট বার্তা দলনেত্রী মমতার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement