মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
সব কিছু ঠিক থাকলে কলকাতায় বিধানসভার পরে শিলিগুড়িতেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘সম্মুখ সমর’ হতে চলেছে। ব্যক্তিগত কাজ, প্রশাসনিক ও দলীয় কর্মসূচি নিয়ে কয়েক দিনের জন্য উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মমতা। শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আগামী ১২ ডিসেম্বর সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চিত’দের নিয়ে সেই দিনই পাল্টা কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি। যার প্রধান মুখ হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা বিরোধী দলনেতার।
দুর্নীতি নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের কৌশল নিয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউজ়ের সামনে সভা করে সুর বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন। তার পর থেকেই বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে বিজেপির পরিষদীয় দল সরাসরি মমতাকে ‘চোর’ ধ্বনি শোনাচ্ছে। তিন রাজ্যের ফলাফল বিজেপির পক্ষে যাওয়ায় সেই প্রচারে ‘ঝাঁঝ’ অনেকটাই বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা শুভেন্দু-সহ বিজেপি নেতাদের ‘পকেটমার’ বলে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। সেই উত্তাপেই শিলিগুড়িতেও তৃণমূলের পাল্টা কর্মসূচি নিতে চলেছে বিজেপি।
সম্প্রতি বিজেপির একটি বিক্ষোভ মোকাবিলা প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেছিলেন, ‘‘বিজেপির অধিকার আছে বিক্ষোভ দেখানোর। সেই বিক্ষোভ কী করে মোকাবিলা করতে হয়, সেটাও জানা আছে। বিজেপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে মেরে হাত-পা ভেঙে দেব!’’ সূত্রের খবর, এই মন্তব্য কানে পৌঁছতেই বিরোধী দলনেতা সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। সূত্রের খবর, তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’র কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের ‘বঞ্চিত’দের নিয়ে সভা করার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের প্রথম পছন্দ বাঘাযতীন উদ্যান। কিন্তু তারা ধরেই নিচ্ছে, পুরসভার অধীনে থাকা এই জায়গায় সভা করার অনুমতি তারা পাবে না। তাই বিকল্প জায়গা হিসেবে কাওয়াখালির কথাও তারা বিবেচনা করছে। তবে সভা না করে ‘মমতা চোর’ স্লোগানকে সামনে রেখে মিছিলও হতে পারে।
শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ সরাসরি এই কর্মসূচির বিষয়ে কিছু না বললেও তাঁর মন্তব্য, “তৃণমূল ভাবছে পুজো অনুদানের নাম করে ৭০ হাজার টাকার বিনিময় ক্লাবগুলোর বিবেচনাবোধ কিনে নেওয়া যাবে। খেলার পরিকাঠামো তৈরি না করে, খেলা বাতিল করে মুখ্যমন্ত্রীর সভা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের বিধায়কদের উপস্থিতিতে ১২ তারিখ এই নিয়ে এমন বিক্ষোভ হবে,
মুখ্যমন্ত্রী টের পাবেন!” পাল্টা গৌতমের বক্তব্য, “রাজনৈতিক সৌজন্যের পাঠ বিজেপি বহু দিন তুলে দিয়েছে। ওরা যা পারে, করুক।”