সুব্রত বক্সী (বাঁ দিকে উপরে), দীনেশ ত্রিবেদী, মৌসম বেনজির নুর (ডান দিকে উপরে) ও অর্পিতা ঘোষ। —ফাইল চিত্র
রাজ্যসভার জন্য তৃণমূলের চার প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদের উচ্চ কক্ষের জন্য পুরোদস্তুর রাজনৈতিক মুখই বেছে নিলেন তৃণমূল নেত্রী।
এ বারের রাজ্যসভা ভোটের ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তৃণমূল শিবির থেকে যে সব নাম সামনে এসেছিল, তাতেই রবিবার আনুষ্ঠানিক সিলমোহর দিয়েছেন মমতা। নারী দিবসে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে মমতা রবিবার টুইট করেছেন, ‘‘আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, মৌসম বেনজির নূর, অর্পিতা ঘোষ, দীনেশ ত্রিবেদী ও সুব্রত বক্সীকে তৃণমূল রাজ্যসভার জন্য মনোনীত করছে। গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা, তারই অঙ্গ হিসেবে আমাদের অর্ধেক প্রার্থী মহিলা।’’ প্রসঙ্গত, তৃণমূল সাংসদদের মধ্যে মহিলার অনুপাত এখন লোকসভায় ৪১% ও রাজ্যসভায় ৩১%। সেখানে জাতীয় গড় ১৩%।
বক্সী, দীনেশ, মৌসম ও অর্পিতা— চার জনই আগে তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। শেষ তিন জন গত লোকসভা ভোটে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দলীয় কাজেই যুক্ত। এই তালিকার মধ্যে একমাত্র বক্সীকে নিয়েই প্রশ্ন ছিল। কারণ, গত লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে তিনি রাজি হননি। এ বার অবশ্য মমতা তাঁকে রাজি করিয়েছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বক্সী সাংসদ হলে সাংগঠনিক ও দলীয় দায়িত্ব পালনেও কিছু বাড়তি সুবিধা হবে বলে মনে করছেন দলনেত্রী মমতা।
আরও পড়ুন: রত্নার উত্থানে আগুনে ঘি! শোভন শিবিরে তৎপরতা, আসরে বিজেপি-ও
বাংলা থেকে রাজ্যসভার পাঁচটি আসন শূন্য হচ্ছে। এখন পঞ্চম নাম ঘোষণা না হলেও ওই আসনে তৃণমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে না, এমন কোনও ইঙ্গিত অবশ্য নেই। বিরোধীরা শেষ পর্যন্ত কাকে প্রার্থী করছে, তা দেখে নিয়ে শাসক দল তাদের রণকৌশল চূড়ান্ত করবে। চার প্রার্থীকে জেতানোর পরেও অতিরিক্ত যে ভোট তৃণমূলের হাতে থাকবে, কৌশলগত ভাবে তা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হবে সময় বুঝে। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘পঞ্চম আসনের দিকে আমরা নজর রাখছি। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে।’’ তৃণমূল পঞ্চম প্রার্থী দিলে তখনই রাজ্যসভায় ভোটাভুটি হবে। অন্যথায় তৃণমূলের চার এবং বিরোধীদের এক প্রার্থী সরাসরি এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হবেন।
দুই মহিলা প্রার্থী মৌসম ও অর্পিতা গত বছর লোকসভা ভোটে হারের পর থেকে মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কেউই ময়দান ছেড়ে যাননি। ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হলেও দীনেশ তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য হিসেবে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে মমতার দেওয়া দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্যে নানা কর্মসূচিতে তৃণমূল নেত্রী তাঁকে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠিয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, দলের সৈনিক হিসেবে ভূমিকা পালন করারই স্বীকৃতি মিলল রাজ্যসভার প্রার্থী-পদে।
তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার মন্তব্য, ‘‘শাসক দলে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার দাবিদার সব সময়েই বেশি থাকে। এ বারও অনেকে প্রার্থী হতে চেয়েছেন। কিন্তু দলের কাজে যাঁরা পরীক্ষিত, তাঁদের উপরেই দলনেত্রী ভরসা রেখেছেন।’’