Drinking Water Crisis

জলের তেষ্টা মেটানোর চেষ্টায় উড়েছে দাঁত! ফেটেছে নাক, মালদহের গ্রামে কেন এই দশা?

নলকূপের উপরেই ভরসা মালদহের গ্রামের বাসিন্দাদের। কিন্তু এই গ্রীষ্মে জলস্তর অনেক নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকে জল বেরোচ্ছে না। তাই গ্রামবাসীরা এলাকায় সাবমার্সিবল বসানোর দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ২০:১৪
Share:

গ্ৰামের বহু মহিলার দাঁত ভেঙে গিয়েছে। কারও আবার কপাল ফেটেছে। জখম হয়েছে নাক-ঠোঁট। —নিজস্ব চিত্র।

জলের জন্য কারও উড়ে গিয়েছে দাঁত। আবার কারও ফেটে গিয়েছে কপাল, ঠোঁট-নাক। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কেন এ অবস্থা? আসল ঘটনাই বা কী?

Advertisement

গ্রীষ্মের দাবদাহে তীব্র জলকষ্ট মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের কিসমত বড়োল গ্ৰামে। প্রায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে গ্রামের নলকূপগুলিতে জল উঠছে না। পানীয় জলের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে ওই গ্রামে। বাড়ি থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে মাঠের মিনি পাম্প থেকে পানীয় জল বয়ে নিয়ে আসতে হচ্ছে গ্রামের বধূদের। পুকুরের ঘোলাটে জলেই চলছে স্নান, কাপড় কাচা এবং বাসন ধোয়ার কাজ।

পানীয় জলের জন্য বাড়ির নলকূপের হাতল চাপতে গিয়ে তা ছিটকে প্রায়শই দুর্ঘটনা হচ্ছে। নলকূপের হাতলের আঘাতে গ্ৰামের বহু মহিলার দাঁত ভেঙে গিয়েছে। কারও আবার কপাল ফেটেছে। জখম হয়েছে নাক-ঠোঁট। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক দফতরে বার বার লিখিত আবেদন জানিয়েও সুরাহা হয়নি। তাই ক্ষোভে ফুঁসছেন গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

নলকূপের উপরেই ভরসা কিসমত বড়োল গ্রামের বাসিন্দাদের। কিন্তু এই গ্রীষ্মে জলস্তর অনেক নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকে জল বেরোচ্ছে না। তাই গ্রামবাসীরা এলাকায় সাবমার্সিবল বসানোর দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সে দাবি কবে মিটবে? কবেই বা গ্রীষ্মে জলকষ্টের সমস্যা দূর হবে? তা জানা নেই গ্রামবাসীদের। শীঘ্রই এ সমস্যা মেটানো না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। এ অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য মামনি দাসের স্বামী আশিসচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে বেশ কয়েক বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, তুলসীহাটা গ্রামপঞ্চায়েতটি তৃণমূল পরিচালিত হলেও কিসমত বড়োল অঞ্চলের সদস্য বিজেপি। এ গ্রামের বধূ পুতুল দাস বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে নলকূপে জল উঠে না। নলকুপের হাতল ছিটকে মুখে লেগে অনেকেরই দাঁত ভেঙেছে। গ্রামের অনেকেরই আঘাত লেগেছে নাকেমুখে।’’ ভারতী দাস নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গত তিন মাস ধরেই এ সমস্যা হচ্ছে। গরমকালে জলস্তর আরও নেমে গিয়েছে। নলকূল চাপলেও জল আসে না। জমির সাবমার্সিবল থেকে জল নিতে হয়। জলের জন্য প্রায় আধ কিলোমিটার হাঁটতে হয়। এ সব কথাই প্রশাসনকে জানিয়েছি। তবুও সমাধান হয়নি।’’

গ্রামবাসীদের জলকষ্টের সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের ব্লক প্রশাসন। ব্লক আধিকারিক অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘জলকষ্টের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দূর করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শীঘ্রই তা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement