দাতা: রক্ত দিলেন হাসপাতালের সহকারী সুপার ইসমাইল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য দরকার রক্ত। কিন্তু মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত নেই। ভেঙে পড়েছিলেন পুরাতন মালদহের বাসিন্দা কিশোরীলাল মণ্ডল। শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের সহকারী সুপার ইসমাইল মণ্ডল নিজেই সোমবার এক ইউনিট রক্ত দিয়ে রক্ষা করলেন কিশোরীলালের স্ত্রী হিরাকে। ইসমাইল বলেন, ‘‘একেবারেই রক্ত নেই। অসহায় লাগছিল। ভাগ্যিস আমার রক্তের গ্রুপ মিলে গেল। তাই দিতে পারলাম।’’
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দৈনিক প্রায় ৭০ ইউনিটের মতো রক্তের প্রয়োজন হয়। থ্যালাসেমিয়া রোগীও রয়েছেন জেলায়। ইংরেজবাজার শহরে ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল, একটি মহকুমা হাসপাতাল এবং ১৫টি গ্রামীণ হাসপাতাল নির্ভর
করে মেডিক্যালের এই ব্লাড ব্যাঙ্কের উপরেই। শুধু মেডিক্যালেই রোজ অন্তত ৩৫ জন প্রসূতির অস্ত্রোপচার করে সন্তান হয়। তাঁদের অন্তত এক ইউনিট করে রক্ত দিতে হয়। সব মিলিয়ে মেডিক্যালেই প্রতিদিন প্রয়োজন ৫০ ইউনিট করে রক্ত। ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘এখন মেডিক্যালে রক্তের কোন ইউনিটই নেই।’’ সাইন বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তা জানিয়েও দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই এখন এই অবস্থা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের আঞ্চলিক ব্লাডব্যাঙ্কের অধিকর্তা মৃদুময় দাস জানান, সেখানেও বেশ কিছু গ্রুপের রক্ত একেবারেই নেই। কয়েকটি গ্রুপের রক্ত সামান্য কয়েক ইউনিট করে রয়েছে। তবে সব থেকে খারাপ অবস্থা মালদহ ও রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের। রক্ত না দিলে রক্ত মিলছে না।
হিরার জন্যও তাই আগের বার নিজেই রক্ত দিয়েছিলেন কিশোরীলাল। তাঁদেরও রক্তের গ্রুপ এক। কিন্তু তার মাত্র কয়েক দিন পরে এ দিন হিরা আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে এ বার কিশোরীলালের রক্ত আর নেওয়া যায়নি। তখনই সমস্যা শুরু হয়। পেশায় রাজমিস্ত্রি কিশোরীলাল সারা দিন হন্যে হয়ে ঘুরেও কোনও সুরাহা করতে পারেননি। তাই দেখেই ইসমাইল ঠিক করেন, তিনিই রক্ত দেবেন।
কিন্তু ব্লাডব্যাঙ্কগুলোর এমন অবস্থা কেন? ইসমাইল বলেন, “ভোটের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর রক্তদান শিবির বন্ধ রয়েছে। তা ছাড়া গরমের সময় এমনিতেই রক্তদান শিবির কম হয়। এই সমস্যা মেটাতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’’