মালদায় গঙ্গাবক্ষে চলছে উদ্ধারকাজ। নিজস্ব চিত্র।
মালদহের মানিকচক ঘাটে সোমবার সন্ধ্যায় বার্জ উল্টে গঙ্গাবক্ষে লরি পড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্ধারকাজ চলছে জোরকদমে। গভীর রাত পর্যন্ত ১৫জন নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১২জন সাঁতার কেটে গঙ্গার বিভিন্ন পাড়ে উঠে এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে ৩ জন এখনও নিখোঁজ। নিখোঁজ তিনজন হলেন বছর পঁয়ত্রিশের ময়না শেখ, বছর চল্লিশের মন্টু শেখ এবং বার্জের মেকানিক তারক প্রসাদ যাদব। শোনা যাচ্ছে, তাঁরা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার ভোরে গতি পেয়েছে সেই উদ্ধারকাজ। ঘটনাস্থলে রয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
পাশাপাশি পাথর বোঝাই ৮টি লরি-সহ বার্জটি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গঙ্গাবক্ষে জলের তলায়।সেগুলিকেও তোলার চেষ্টা করা হয় মঙ্গলবার। কিন্তু এখনও অবধি গঙ্গার তলদেশ থেকে লরি তুলতে ব্যর্থ ক্রেন। একটি লরির খোঁজ পেয়ে সেটিকে তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা করতে গিয়ে ছিঁড়েছে ক্রেনের শিকল। তাই এখন বন্ধ রয়েছে লরিগুলিকে তোলার কাজ। এ গুলি তোলার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের রাজমহল ঘাট থেকে পাথর বোঝাই ১০টি লরি মালদহের মানিকচক ঘাটে এসে ভিড়েছিল। বার্জ থেকে এক এক করে লরি নামছিল। একটি লরি নেমে নিরাপদে নদীর ঘাট থেকে উপরে উঠে আসে। কিন্তু দ্বিতীয় লরিটি নামার সময়েই বিপত্তি। লরিগুলির ভারে এক দিকে কাত হয়ে উল্টে যায় বার্জটি। ফলে ৮টি লরিই ডুবে যায় জলে।
এই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মানিকচক ঘাটে পৌঁছেছিল পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া এবং জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে মালদহেই ছিলেন সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। খবর পেয়ে তিনি-সহ জেলা সিপিএম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব ঘটনাস্থলে যান।
ঝাড়খণ্ড থেকে মালদহের মানিকচক ঘাটের মধ্যে বার্জে (স্থানীয়দের কাছে লঞ্চ বলেই বেশি পরিচিত) লরি চলাচল এখানকার পরিচিত দৃশ্য। এক একটি বার্জে ১০ থেকে ১২টি লরি পারাপার করা হয়। সড়কপথে অনেক ঘুরে আসতে হয় বলে লরি চালকরা এই জলপথই বেছে নেন। যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীরাও পারাপার করেন এই বার্জগুলিতে। দু’টি ঘাটই নিয়ন্ত্রণ করে ঝাড়খণ্ড সরকার। ঘাটের বরাতও পড়শি রাজ্য থেকে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু বার্জগুলিতে ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত লরি বা পণ্য পরিবহণ হচ্ছে কি না, সে সব ঠিকমতো নজরদারি হয় না বলে অভিযোগ। এমনকী, যাত্রী বা বার্জ কর্মীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট-সহ জীবনরক্ষার সামগ্রীরও সঙ্কট রয়েছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
আরও পড়ুন: আলু-পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেন্দ্র কৃষি আইন বদলানোয়, মোদীকে তোপ মমতার
আরও পড়ুন: কাজ সেরে ফেরার পথে কোচবিহারে বাসের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত করোনাযোদ্ধা-সহ ২