মহম্মদ ইজাজ ওরফে ইজাজ আহমেদ।—ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে তাকে খুঁজছিল বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। জানুয়ারিতে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল চক্রান্তকারী মহম্মদ ইজাজ ওরফে ইজাজ আহমেদ অবশেষে পুলিশের জালে। রবিবার ভোরে বিহারের গয়ায় তাকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
পুলিশ জানায়, জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ’ বা জেএমবি-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে চলত ইজাজ। বস্তুত, ইজাজই এ দেশে ওই জঙ্গি সংগঠনের ‘আমির’ (চাঁই)। তার বাড়ি বীরভূমের পাড়ুইয়ের অবিনাশপুরে।
লালবাজার জানিয়েছে, বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত কওসর ওরফে বোমা মিজান গত বছর বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতার হওয়ার পরে এ দেশে জেএমবি-র প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয় ইজাজ। সে জেএমবি-র আল-কায়দা ঘনিষ্ঠ শাখার প্রধান বড়ভাই ওরফে সালাউদ্দিন ও কওসরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। তার কাছ থেকে ল্যাপটপ, হার্ড ডিস্ক, চিঠি-সহ জঙ্গি কার্যকলাপের নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোমবার তাকে গয়ার আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক এক দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কলকাতায় আনার নির্দেশ দেন।
এসটিএফ সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন বাঙালি-প্রধান এলাকায় বেআইনি মাদ্রাসা থেকে জেএমবি-র জন্য লোক নিয়োগ করা এবং জঙ্গি ঘাঁটি তৈরির দায়িত্ব ছিল ইজাজের উপরে। এক দশকের বেশি সময় ধরে সে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরে জঙ্গি তৎপরতা কিছুটা থমকে যায়। বুদ্ধগয়ায় বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরপাকড় শুরু হতেই ইজাজ গা-ঢাকা দেয় ভিন্ রাজ্যে। বাঙালি শ্রমিকদের ভিড়ে মিশে সে বেশ কয়েক মাস বেঙ্গালুরু এবং কেরলে লুকিয়ে ছিল। এক বছর ধরে গয়ায় ঘুরে ঘুরে বাচ্চাদের জামাকাপড় বিক্রি করত ইজাজ। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় এজাজ জানিয়েছে, খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরে তার প্রধান কাজ ছিল সংগঠনের জন্য কর্মী নিয়োগ করা। বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদে (ধুলিয়ান) জেএমবি-মডিউল তৈরিতে তার ভূমিকা ছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, ভারতীয় সংগঠনের ‘আমির’ বা প্রধান হিসেবে ইজাজের নাম ঘোষণা করে সালাউদ্দিনই। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে জেহাদি কার্যকলাপ চালাত ইজাজ। এসটিএফ জানিয়েছে, মাস দুয়েক আগে শিয়ালদহ স্টেশনে গ্রেফতার হয় বীরভূমের জঙ্গি রবিউল। তার সঙ্গে পরিচয় ছিল ইজাজের। রবিউলও সংগঠনের জন্য লোক নিয়োগ করত। ইজাজকে জেরা করে সালাউদ্দিনের খোঁজ মিলবে বলে আশা করছে এসটিএফ।