মহুয়া মৈত্র (বাঁ দিকে)। (ডান দিকে) শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারী তাঁর কোলাঘাটের ভাড়াবাড়িতে পুলিশি অভিযান নিয়ে ক্ষুব্ধ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতিতে কেন অভিযান হল? পুলিশের সার্চ ওয়ারেন্ট ছিল কি? পাশাপাশি, ভিডিয়োগ্রাফি কেন হয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন করেন। আর এখানেই শুভেন্দুর সঙ্গে নিজের ‘মিল’ পেলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। বিজেপি নেতাকে তৃণমূল প্রার্থীর খোঁচা, ‘এক যাত্রায় কেন পৃথক ফল হবে?’
মঙ্গলবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে শুভেন্দুর বাসভবনে যায় পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, প্রায় বাড়ি ঘিরে ফেলেছিলেন ৭০-৮০ জন পুলিশকর্মী। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, তারা শুভেন্দুর ভাড়াবাড়িতে ঢোকেনি। এক দুষ্কৃতীকে খুঁজতে গিয়েছিলেন। এই পুলিশি ‘অভিযান’ নিয়ে শুভেন্দু তৃণমূলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন।
নন্দীগ্রামের বিধায়কের অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তৃণমূল। কোলাঘাট থানার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি মমতার অত্যাচারের শিকার।’’ এই প্রেক্ষিতে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেছেন মহুয়া। তিনি লেখেন, ‘‘হ্যালো বিজেপি! এত হইচই কেন?’’ এর পর সিবিআইকে ‘মোদীর পুলিশ’ বলে কটাক্ষ করে মহুয়া অভিযোগ করেন তাঁর ভাড়াবাড়িতেও তাঁর অনুপস্থিতেই সিবিআই অভিযান চালিয়েছিল। সেখানেও কোনও ভিডিয়োগ্রাফি হয়নি। সংবাদমাধ্যমের কেউ ছিলেন না। সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পরিকল্পনা থাকতে পারত। কিন্তু এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ করেও তিনি এখনও জবাব পাননি। তার পরেই মহুয়া কটাক্ষ করে লেখেন, এক যাত্রায় কেন পৃথক ফল হবে?
উল্লেখ্য, কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদ মহুয়া ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আবার তৃণমূলের টিকিটে লোকসভা প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণনগর থেকেই। গত ১৯ মার্চ ‘সংসদে ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন লোকপাল। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে মহুয়ার বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করে সিবিআই। পরে মহুয়ার কলকাতার বাড়ি এবং অফিস মিলিয়ে মোট চারটি আস্তানায় তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। নির্বাচন কমিশনে মহুয়া অভিযোগ করেন ওই ঘটনার পরেই। সেখানে তিনি প্রশ্ন করেন, ভোট ঘোষণা হওয়ার পর যখন গোটা দেশে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি বলবৎ করা হয়েছে, তখন রাজনৈতিক নেতার বাড়িতে গিয়ে এই ধরনের তল্লাশিও কি আদর্শ আচরণের বিরোধী নয়? ঘটনাক্রমে, মঙ্গলবার তাঁর ভাড়াবাড়িতে পুলিশি অভিযানের প্রেক্ষিতে শুভেন্দুও জানিয়েছেন, এ নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবেন।
অন্য দিকে, সমাজমাধ্যমেও মমতাকে নিশানা করে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। তাঁর দাবি, রাজনৈতিক লড়াইয়ে যুঝে উঠতে না পেরে এমন ‘সস্তার নকশা’ করছেন শাসকদলের নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, এই পুলিশি অভিযানে হাই কোর্টের নির্দেশের অবমাননা হয়েছে। কারণ, তিনি আদালতের রক্ষাকবচ পেয়েছেন।