প্রতীকী ছবি।
গরমের ছুটিকে হটিয়ে দিল মাধ্যমিক পরীক্ষা! মধ্যশিক্ষা পর্ষদ শনিবার জানায়, আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা ১ জুন শুরু হয়ে চলবে ১০ জুন পর্যন্ত। ওই পরীক্ষার সূচিও এ দিন প্রকাশ করেছে পর্ষদ। আগে জানানো হয়েছিল, ২৪ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটি চলবে। এ দিন পর্ষদ জানিয়েছে, পরীক্ষার জন্য গরমের ছুটির সময়সীমা বদল করা হবে।
অতিমারির দরুন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা জুন পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার কথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি। এ দিন পর্ষদের ঘোষিত মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিন ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। তবে প্রথম ১৫ মিনিট শুধু প্রশ্ন পড়ার জন্য বরাদ্দ।
কয়েক দিন আগে পর্ষদের ওয়েবসাইটে আসন্ন বছরের নমুনা ছুটির যে-তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে গরমের ছুটি ৩ জুন পর্যন্ত চলার কথা আছে। কিন্তু ১ জুন মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হলে সেটা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে পর্ষদের বক্তব্য, গরমের ছুটির দিন বদল করে কয়েক দিনের মধ্যেই ছুটির নতুন তালিকা জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষা ও ছুটি নিয়ে এমন গোলমাল হল কেন? পর্ষদের দাবি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি দেখে ছুটির তালিকা বদলের কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছিল।
উচ্চ মাধ্যমিকের মধ্যে হুল দিবস নিয়ে জট আছে। শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানিয়ে দেন, ৩০ জুন হুল দিবস। ওই দিন উচ্চ মাধ্যমিকের যে-সব পরীক্ষা রয়েছে, তা নেওয়া হবে না। ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রকাশিত পরীক্ষারসূচিতে ৩০ জুন পরীক্ষা রয়েছে। কিন্তু ওই দিন আদিবাসী সম্প্রদায়ের হুল দিবস। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরেও এসেছে। এই নিয়ে সংসদের সঙ্গে কথা বলেছি। সে-দিনের নির্ধারিত পরীক্ষা অন্য কোনও দিন নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। ৩০ জুন উচ্চ মাধ্যমিকের কোনও পরীক্ষা ১ থেকে ১০ জুন হবে না,’’ বলেন পার্থবাবু। তিনি জানান, ওই দিন যে-সব পরীক্ষা রাখা হয়েছিল, সেগুলি কবে নেওয়া হবে, সংসদ পরে তা জানিয়ে দেবে। সূচি অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক শুরু ১৫ জুন, শেষ ৩০ জুন। ভূগোল, রাশিবিজ্ঞান, কস্টিং অ্যান্ড ট্যাক্সেশন, হোম ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের পরীক্ষা আছে ৩০ জুন। ওই দিন একাদশ শ্রেণিতেও ওই সব বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনকে ৫ বছরে, জার্মানি-জাপানকে ১০ বছরে টপকাবে ভারতের অর্থনীতি
এত দিন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের পাঠানো প্রশ্নপত্রে স্কুলগুলি উচ্চ মাধ্যমিকের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নিত। কিন্তু এ বার প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার দায়িত্বের সঙ্গে এই পরীক্ষার বিষয় নির্বাচনের দায়িত্বও স্কুলগুলির উপরে ছেড়ে দিয়েছে সংসদ। অন্যান্য বছরের মতো প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করে পাঠাতে হবে না। শুধু মূল্যায়নের নম্বর জমা দিতে বলেছে সংসদ। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, ‘‘যে-হেতু খাতা জমা দিতে হচ্ছে না, তাই পরীক্ষা না-নিয়েই পরীক্ষার্থীদের ৩০ নম্বর পাইয়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া নতুন ব্যবস্থায় প্রতিটি স্কুল নিজেদের মতো প্রশ্ন তৈরি করে পরীক্ষা নিতে পারবে। এর ফলে মূল্যায়ন এবং নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য থাকবে না।’’ তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা কোনও প্রাক্টিক্যাল ক্লাসই প্রায় করেননি। এই পরিস্থিতিতে স্কুলগুলি কী ভাবে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেবে, সেই বিষয়ে কোনও দিশা দেওয়া হয়নি সংসদের নির্দেশে। সৌগতবাবু জানান, তাঁদের সংগঠনের তরফে আগের নিয়মেই প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ইতিমধ্যে সংসদের সভানেত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।