মদন মিত্র।
নেটমাধ্যমে আবার সোরগোল ফেললেন মদন মিত্র। প্রকাশ্যে সরাসরি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কামারহাটির পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব চাইলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক। শুক্রবার রাতে একটি ফেসবুক লাইভ করেন মদন। সেই লাইভে দলের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেন, তাঁকে কামারহাটির পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হলে তিন মাসের মধ্যেই ওই পুরসভার ভোল পাল্টে দেবেন। কলকাতা শহরের চেয়েও উন্নত করবেন কামারহাটিকে।
তবে ভিডিওটি আবার দ্রুত নিজের ফেসবুক থেকে মুছেও দেওয়া হয়। মদনের ফেসবুক পেজে গেলে এখন আর সেটি দেখা যাচ্ছে না। তবে তার মধ্যেই মদনের ওই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। সেটি ঘুরতেও শুরু করে হোয়াট্সঅ্যাপে। যদিও আনন্দবাজার ডিজিটাল ওই ভিডিয়োর সত্যাসত্য যাচাই করেনি।
বিধানসভায় মদনের প্রত্যাবর্তন হলেও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি। তা নিয়ে তাঁর অনুগামীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কামারহাটির সদ্য নির্বাচিত বিধায়ককে কখনই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। শুক্রবার ওই স্বল্প আয়ুর ভিডিয়োতে মদনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কামারহাটির পুরপ্রশাসকের দায়িত্ব পেলে তিন মাসের মধ্যে এই পুরসভাকে কলকাতা পুরসভার থেকে উন্নত করে তুলব।’’ এ-ও বলেন, যদি নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হন তিনি, তা হলে তিন মাস পর তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে দল। কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়েই বলেন, দল যদি চায়, তিনি বিধায়ক পদও ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত, শনিবার তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক রয়েছে। তার অব্যবহিত আগেই মদনের ভিডিয়োটি তোলা হয়েছে। বস্তুত, ওই ভিডিয়োয় মদন কোর কমিটির বৈঠকের উল্লেখও করেছেন। তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘দিন না একটা দায়িত্ব। আমি ভিক্ষা চেয়ে নিচ্ছি। তিন মাসের মধ্যে কামারহাটিকে কলকাতার চেয়েও উন্নত করে ছাড়ব। কাল (শনিবার) তো মিটিং আছে। অবশ্য সে আবার ভার্চুয়াল। কী করবেন? দল থেকে তাড়িয়ে দেবেন? আমি জানি, আমাকে অনেকে এই ভিডিয়োর জন্য বিভিন্ন কথা বলবে। কিন্তু আমি মদন মিত্র। আই ডোন্ট কেয়ার!’’ পাশাপাশিই মদনকে এমনও বলতে শোনা যায় যে, তিনি অন্য কিছু চান না। কিন্তু অন্তত কামারহাটির দায়িত্ব যেন তাঁকে দেওয়া হয়। শনিবার ওই ভিডিয়ো নিয়ে মদনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।
শুক্রবার রাতেই মদনের ওই ভিডিয়ো নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। এবং তার পর পর শুক্রবার রাতেই ভিডিয়োটি আর মদনের ফেসবুকে দেখা যায়নি। ঠিক কী কারণে ভিডিয়োটি আর সাধারণ্যে দেখা যাচ্ছে না, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। দলের তরফে ওই ভিডিয়ো নিয়ে কিছু বলাও হয়নি। গত বিধানসভা নির্বাচনে কামারহাটি বিধানসভা থেকে মদন জয়ী হওয়ার পর থেকে জল্পনা শুরু হয়েছিল তাঁকে মন্ত্রিসভায় আনা হবে কি না। শেষপর্যন্ত তা হয়নি। এর মধ্যেই নারদা মামলায় গ্রেফতার হতে হয়েছে মদনকে। আপাতত তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন।