—নিজস্ব চিত্র।
জরায়ুর রোগে আক্রান্ত এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনসুরা বিবির জন্য এ বার রক্ত এল লখনউ থেকে। মনসুরার জন্য ‘বম্বে ও নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্ত চাই। যা বিরল। এ রাজ্যের কোথাও এই গ্রুপের রক্তদাতা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। অবশেষে মনসুরার জন্য রক্তদাতা খুঁজতে এগিয়ে এলেন বাংলা এবং রাজস্থানের এমন দু’জন, যাঁদের শরীরেও বইছে বিরল ‘বম্বে গ্রুপে’র রক্ত।
গত বুধবার, ৮ ডিসেম্বর মনসুরার জরায়ুতে অস্ত্রোপচারের জন্য কেরল থেকে এক ইউনিট রক্ত এসেছিল। তার পরই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু সে সময় তিন ইউনিট রক্তের প্রয়োজন বলে জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসক এস এন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘৮ ডিসেম্বর মনসুরার জরায়ু থেকে টিউমার বাদ দেওয়ার জন্য অপারেশন করা হয়েছিল। কেমোথেরাপির জন্য এ বার রক্ত প্রয়োজন। তবে এই গ্রুপের রক্ত না পাওয়া গেলে কেমো শুরু করা সম্ভব হবে না।’’ এ ছাড়া মনসুরার শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও কম বলে তাঁর আরও রক্তের প্রয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
পরিবার সূত্রে খবর, একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মনসুরার জন্য রক্তের খোঁজ শুরু হয়। সে সময় অন্যান্য রাজ্যের বিরল রক্তের অধিকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন রাজস্থানের শচীন সিঙ্ঘল। এ ছাড়া, মনসুরার জন্য রক্ত জোগাড় করতে এগিয়ে আসে কলকাতা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। ওই সংস্থার মৃদুল দোলুই বলেন, “আমারও বিরল গ্রুপের রক্ত হলেও, তা ‘বম্বে ও পজিটিভ’। এবং মনসুরার জন্য চাই ‘বম্বে ও নেগেটিভ’। তবে পজিটিভের থেকেও খুব কম মানুষের মধ্যেই এই ‘বম্বে ও নেগেটিভ গ্রুপে’র রক্ত পাওয়া যায়।”
লখনউ গিয়ে রক্তদান করেন ঋষভ। —নিজস্ব চিত্র।
শচীন এবং মৃদুলদের চেষ্টাতেই উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ (পূর্বেকার ইলাহাবাদ)-এর এক বাসিন্দার খোঁজ মেলে। তিনিও ‘বম্বে ও নেগেটিভ’ রক্তের অধিকারী। মনসুরার জন্য ৩০ বছরের সেই ঋষভ পাণ্ডেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। মঙ্গলবার প্রয়াগরাজ থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিমান অমিল হওয়ায় লখনউ গিয়ে রক্তদান করেন ঋষভ। সন্ধ্যায় সে রক্তই কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে বলে সূত্রের খবর।