এলপিজি দুর্নীতিতে ধৃত বিজেপির রাজ্য স্তরের নেতা রণজিৎ মজুমদার।—ফাইল চিত্র।
এলপিজি দুর্নীতিতে বিজেপির রাজ্য স্তরের এক নেতাকে গ্রেফতার করল জোড়াসাঁকো থানা। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম রণজিৎ মজুমদার। শুক্রবার গভীর রাতে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। শনিবার ধৃত নেতাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। কলকাতা পুলিশ জানায়, মাস দুয়েক আগে জোড়াসাঁকো থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক প্রাক্তন বিজেপি নেতা। কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের ৯ জন বাছাই করা অফিসারকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছিল। দু’ দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল রণজিৎকে।
বিজেপি সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদে এক মণ্ডল সভাপতি-সহ আট জন দলীয় কর্মী এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর চার জন সদস্য এলপিজি-র ডিস্ট্রিবিউটরশিপ পাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, এক শীর্ষ নেতা তাঁদের জানান, মাথাপিছু ২-৩ লক্ষ টাকা দিলে ডিস্ট্রিবিউটরশিপ নিশ্চিত। সেই মতো টাকা দিয়েও লটারির শেষে ডিস্ট্রিবিউটরশিপ মেলেনি। তার পরেই বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতাদের জানানো হয়। জুন মাসে বিষয়টি সামনে আসে। অভিযোগ দায়ের হয় পুলিশেও। প্রসঙ্গত, গত বছর বসিরহাটে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দুর্নীতিতেও বিজেপির নাম জড়িয়েছিল।
এলপিজি কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, ওই বিষয়ে দলীয় কর্মীদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। রণজিতের গ্রেফতারির পরে এ দিন দিলীপবাবু অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল আমাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা করছে। এটাও তেমনই। ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু এ ভাবে বিজেপিকে রোখা যাবে না।’’
লিখিত অভিযোগের একাংশ।
রণজিতের আইনজীবী ভাস্কর দে-র দাবি, পুলিশ তাঁর মক্কেলকে নিয়ম মেনে সমন পাঠায়নি। রণজিৎ নিজে তদন্তে সহযোগিতা করতে গিয়েছিলেন। তখনই গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: এক বছরে মাঝেরহাটে নতুন সেতু! এত কম সময়ে গড়া কি সম্ভব?
২৩৫ জনের তালিকার একাংশ।
পুলিশ সূত্রের দাবি, এই তদন্তে সংবাদমাধ্যমে বিজেপির এক পরিচিত মুখের নাম এসেছে। কয়েক জনের নাম বলেছেন খোদ রণজিৎ-ই। তার মধ্যে কয়েক জন প্রথম সারির নেতার নামও রয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্তে যাঁদের নাম উঠে আসবে, তাঁদেরই নোটিস পাঠিয়ে ডেকে পাঠানো হবে। অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে গ্রেফতারও করা হবে।
ই-মেলের এই প্রমাণপত্রই পেশ করেন অশোক বাবু।