সোনারপুরের গণনাকেন্দ্রের সামনে তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র। নিজস্ব চিত্র।
গণনাকেন্দ্রে ঢুকে বিরোধী দলের প্রার্থী এবং এজেন্টদের মারধর করার অভিযোগ উঠল সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্রের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি মঙ্গলবার রাতে দলবল নিয়ে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে পড়েন এবং বিরোধী দলের প্রার্থী এবং এজেন্টদের মেরে কেন্দ্র থেকে বার করে দেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
লাভলির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছেন বাম এবং বিজেপির কর্মীরা। বিধায়ক কী ভাবে গণনাকেন্দ্রে ঢুকলেন, উঠেছে সেই প্রশ্নও।
এ প্রসঙ্গে আক্রান্ত বিজেপি প্রার্থী বাসুদেব নস্কর বলেন, ‘‘ আমি কালিকাপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং মারধর করা হয়েছে। গণনায় আমি ২০০-র কাছাকাছি ভোটে এগিয়েছিলাম। তৃণমূলের তাবড় নেতারা হেরে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ লাভলি মৈত্র কিছু গুন্ডা এনে গণনাকেন্দ্রে ঢুকে পড়েন। আমাদের এজেন্টকে ওঁরা মারধর করে বার করে দেন। আমাদের ওখানে ঢুকতেই দেওয়া হচ্ছে না। লাভলি তাঁর দলবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ নিরুত্তর।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্বের সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি উত্তম কর বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থীদের ওরা আটকে রেখেছে। প্রতিবন্ধী প্রার্থীকেও আটকেছে। জিতেছে বলেই আটকানো হচ্ছে। সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে না। আমরা আইসিকে অনুরোধ করেছি। লাভ হয়নি। বিডিও ফোন ধরছেন না। কোনও সহযোগিতা পাচ্ছি না। লাভলি মৈত্র সার্টিফিকেট নিয়ে ছিঁড়ে ফেলছেন। এই ধরনের নির্বাচন আমরা আগে দেখিনি।’’
আক্রান্ত বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের মেরে তুলে দেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে বিধায়ক লাভলি কী করছেন?’’
যদিও লাভলি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তিনি নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে গণনাকেন্দ্রে ঢুকেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি নিজে লাঙলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটার বলেও জানিয়েছেন।
লাভলির কথায়, ‘‘বিরোধীরা জানে ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক ভাবে ওরা কখনওই জিততে পারবে না। মানুষ ওদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই সকাল থেকেই এ সব অভিযোগ করছে। আমি পঞ্চায়েত সমিতির এজেন্ট হিসাবে গণনাকেন্দ্রের ভিতর ঢুকেছিলাম। বিরোধীদের সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা তারা উপস্থিত ছিল। আমরা সঠিক পদ্ধতিতে জিতেছি।’’
তৃণমূলের জয়ের জন্য মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন লাভলি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, তাঁরা আরও এক বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেছেন। তাঁর প্রার্থীদের জয়ী করেছেন। আগামী দিনে আমরা উন্নয়নের ধারা বজায় রাখব।’’