প্রশান্ত সূর স্মারক বক্তৃতায় সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। মঙ্গলবার নেতাজিনগরে। —নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক কর্মসূচিতে ভাল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। দলের কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ বাড়ছে। আবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্মে রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে ‘সংশয়’ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এ সবের জেরে বাংলায় রাজনৈতিক ভারসাম্যের এখনও পরিবর্তন ঘটেনি। দলকে সতর্ক করে দিয়েই লড়াই আরও জোরালো করার জন্য রাজ্য কমিটিতে বার্তা দিলেন সিপিএমের দুই শীর্ষ নেতা সীতারাম ইয়েচুরি ও সূর্যকান্ত মিশ্র।
আলিমুদ্দিনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির দু’দিনের বৈঠক। চিত্তরঞ্জন থেকে কলকাতা ‘লং মার্চ’, সাধারণ ধর্মঘট, ‘গো ব্যাক মোদী’ বিক্ষোভ— সাম্প্রতিক সব কর্মসূচিই ওই বৈঠকে পর্যালোচনায় উঠে আসছে। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যবাবু বলেছেন, আন্দোলন ও প্রতিবাদের লাগাতার কর্মসূচিতে সাড়া ‘ইতিবাচক’। রাজ্যের যে সব জায়গায় বামেরা দীর্ঘ দিন কোনও কর্মসূচি নিতে পারেনি, সেখানেও মাঠে-পথে লোক হচ্ছে। কিন্তু এতেই ‘আত্মতুষ্টি’র অবকাশ নেই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন সূর্যবাবু। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের মতে, বিজেপি ও তৃণমূলের মেরুকরণের আবহে রাজ্য রাজনীতির ভারসাম্যের এখনও বদল ঘটেনি। হারানো পরিসর ফিরে পেতে বামেদের রাস্তায় নেমে লড়াই আরও তীব্র করতে হবে।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন, অমিত শাহেরা বামেদেরই মূল শত্রু বলে খোলাখুলি চিহ্নিত করছেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কী ভাবে গেরুয়া তাণ্ডবের শিকার, গোটা দেশ তা দেখছে। ইয়েচুরির মতে, এক দিকে যেমন বিজেপির হিন্দুত্ব ও ফ্যাসিবাদের মোকাবিলায় বামেদের আন্দোলন শক্তিশালী হচ্ছে, তেমনই আবার তৃণমূল নেত্রী মমতার অবস্থান ঘিরে প্রশ্ন বাড়ছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট বানচাল করতে মমতার প্রশাসন তৎপর হয়েছে। দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে না গিয়ে মমতা মোদীর সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসেছেন। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য ধারাবাহিক আন্দোলনের পক্ষে সওয়াল করেছেন ইয়েচুরি।
আরও পড়ুন: বাংলাই নিশানা বিজেপির: মমতা
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্যদের কাজের মূল্যায়নও হচ্ছে এ বার। দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্য কমিটির সদস্যদেরও অনেকের দায়িত্ব পালনে গাফিলতি দেখা যাচ্ছে। যাঁদের ‘দুর্বলতা’ চিহ্নিত হচ্ছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না, এই প্রশ্নে চর্চা চলছে দলের অন্দরে।