উদ্ধার হওয়া ভাঙা বন্দুক। নিজস্ব চিত্র ।
এ বার সন্দেশখালিতে উদ্ধার হল ভাঙা বন্দুক। আর তা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় সন্দেশখালির জেলিয়াখালি পঞ্চায়েতের পিঁপড়েখালি খেয়াঘাটের কাছে বন্দুক-সহ এক ব্যক্তিকে আটকে রাখা নিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ওই বন্দুকধারীর সঙ্গীদের হাতাহাতি হয়। তাতে ভেঙে তিন টুকরো হয় বন্দুকটি। তার মধ্যে দু’টি টুকরো পুলিশ উদ্ধার করলেও আর একটি টুকরো-সহ ওই ব্যক্তির খোঁজ পায়নি পুলিশ। বসিরহাট পুলিশ জেলার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। তবে শনিবার পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পিঁপড়েখালি গ্রামে তৃণমূলের পথসভা ও মিছিল ছিল। তাতে উপস্থিত ছিলেন সন্দেশখালির বিধায়ক, তৃণমূলের সুকুমার মাহাতো-সহ অন্য নেতারা। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বন্দুকধারী ব্যক্তি তৃণমূল কর্মী, নাম গোলাম শেখ। বিজেপির স্থানীয় কর্মীদের কয়েক জনের দাবি, তাঁরা সন্ধ্যায় পিঁপড়েখালি খেয়াঘাটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন এক জনকে বন্দুক হাতে নিয়ে নৌকোয় উঠতে দেখে দাঁড় করান। কথায় অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। বিজেপি কর্মীদের দাবি, তখন আরও কয়েক জন এসে বন্দুকধারীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ধস্তাধস্তিতে বন্দুকটি ভেঙে যায়। তদন্তকারীরা জানান, বন্দুকের নলটির খোঁজ মেলেনি।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা লক্ষণ অধিকারী বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ ভোট চাই। পুলিশ তদন্ত করে সত্যিটা সামনে আনুক। তবে বিজেপি নেতা স্টিং ভিডিয়োয় বলে দিয়েছেন, কোন গ্রাম পঞ্চায়েতে কত বন্দুক লাগবে। এখন বিজেপি অস্ত্র উদ্ধারের নাটক করলে মানুষ বিশ্বাস করবে না।’’
সন্দেশখালির বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহ বলেন, ‘‘তৃণমূলের মিছিলে যাওয়া ব্যক্তির কাছ থেকে বন্দুক মিলেছে। গোলাম তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনীর সঙ্গে থাকে। এদের পুলিশ ধরতে পারে না। শুধু রেখা পাত্র, গঙ্গাধরদের বেলায় পুলিশ সক্রিয়তা দেখাতে পারে!’’
সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে, যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি। সেই ভিডিয়োয় দাবি করা হয়, সেখানে যে গণধর্ষণের দাবি বার বার বিজেপি করে আসছে, তা সাজানো। এই নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে অমিত শাহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের একটা নির্দিষ্ট ছক রয়েছে। প্রথমে তারা অপরাধ করে, তার পর প্রথম অপরাধ ভুল প্রমাণ করার জন্য আরও অপরাধ করে। কলকাতা হাই কোর্ট এবং মহিলারা কি মিথ্যা বলছেন? সিবিআই তদন্ত কি ভুল?’’ তৃণমূল সরাসরি জবাব দেওয়া না দিলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘আসল কালপ্রিটমহিলা কমিশন।’’